প্লট বরাদ্দে দুর্নীতি
পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দের দুর্নীতির অভিযোগে শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা ও টিউলিপ সিদ্দিকের মামলায় যে কারণে আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়নি, সে বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছেন বিচারক। আজ সোমবার (১ ডিসেম্বর) ঢাকার বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. রবিউল আলম এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে শেখ রেহানাকে ৭ বছর, শেখ হাসিনাকে ৫ বছর ও টিউলিপ সিদ্দিককে দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। মামলায় অপর ১৪ আসামিকে পাঁচ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ১৭ জনের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়।
রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক রবিউল আলম বলেন, নাগরিক হওয়ায় পৃথিবীর যেখানে অবস্থান করুক না কেন সেই আসামির বিচার করতে আইনে কোনো বাধা নেই। এ মামলায় পলাতক রয়েছেন শেখ হাসিনাসহ ১৬ জন (বাকি এক আসামি আজ আদালতে উপস্থিত ছিলেন)।
আদালত বলেন, ১৬ জন পলাতক থাকায় তাঁদের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। রাষ্ট্রপক্ষ থেকেও কোনো আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়নি।
আইনজীবী কেন নিয়োগ দেওয়া হয়নি—তার ব্যাখ্যায় আদালত বলেন, বাংলাদেশে প্রচলিত আইনে কেবলমাত্র মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে এমন ধারার মামলার ক্ষেত্রে পলাতক আসামির ক্ষেত্রে স্টেট ডিফেন্স (রাষ্ট্রনিযুক্ত) ল ইয়ার (আইনজীবী) নিয়োগ দেওয়ার বিধান রয়েছে।
আদালত বলেন, ‘মৃত্যুদণ্ডযোগ্য ধারা না থাকলে মামলায় পলাতক আসামির ক্ষেত্রে ডিফেন্স ল ইয়ার ল নিয়োগ দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এই মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের কোনো ধারার অভিযোগ না থাকায় আসামিদের জন্য ডিফেন্স ল ইয়ার নিয়োগ প্রদানের কোনো সুযোগ নেই।’
আদালত আরও বলেন, উচ্চ আদালতের অনেক সিদ্ধান্ত রয়েছে যে, ফৌজদারি মামলার ক্ষেত্রে আদালতের শুনানির অধিকার দাবি করার আগে সংশ্লিষ্ট আসামিকে আগে বিচার প্রক্রিয়ায় নিজেকে আত্মসমর্পণ করতে হয় এবং পরে বিচার দাবি করতে হয়। অন্যথায় আসামি বিচারিক সুবিধা পেতে পারে না।
উল্লেখ্য, যুক্তরাজ্যের পাঁচজন শীর্ষস্থানীয় আইনজীবী সম্প্রতি বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে লেখা এক চিঠিতে এ বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেন। চিঠিতে বলা হয়, যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রতিমন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক এই মামলা লড়ার ন্যূনতম অধিকারও পাননি। অভিযোগ সম্পর্কে যথাযথ ধারণা বা আইনজীবীর নিয়োগের সুযোগ কিছুই তিনি (টিউলিপ) পাননি।