নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের কয়েকটি সুপারিশ চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিটের শুনানি শেষ হয়েছে। এই বিষয়ে ২৬ মে আদেশ দেবেন হাইকোর্ট। সোমবার শুনানি শেষে বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর বেঞ্চ আদেশের জন্য এই দিন ধার্য করে দেন। রিটকারী আইনজীবী রওশন আলী আবেদনের পক্ষে নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক।
আইনজীবী রওশন আলী শুনানিতে বলেন, ‘আমিও সর্বস্তরে নারীর ক্ষমতায়ন ও অংশগ্রহণ চাই। তবে নারী সংস্কার কমিশনের সব সুপারিশ বাস্তবায়িত হলে তা হবে মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন, সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক, ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। অনেকগুলো সুপারিশ কমিশনের এখতিয়ারবহির্ভূত। তারা ম্যান্ডেটের বাইরে গিয়ে কিছু সুপারিশ করেছে। এই সুপারিশ নিয়ে কারও সঙ্গে আলোচনা না করেই সরকার বাস্তবায়নের দিকে চলে যাচ্ছে। আমরা সব বিষয় চ্যালেঞ্জ করিনি। কিছু বিষয়ে হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে বলেই এসেছি।’
রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, এটি আনবর্ন চাইল্ড (জন্মগ্রহণ না করা শিশু)। সুপারিশ বাস্তবায়িত হলে আসতে পারে। তারা যেকোনো বিষয়ে সুপারিশ দিতেই পারে। তবে এখনো কোনো কিছুই বাস্তবায়িত হয়নি। তাই এই রিট ইমম্যাচিউর (অপরিপক্ব)।
শুনানির সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী ফৌজিয়া করিম ফিরোজ। তিনি নারী সংস্কার কমিশনের অন্যতম সদস্য। ফৌজিয়া করিম বলেন, ‘প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার পর অনেক নোংরা কথা বলা হচ্ছে। পুতুলের শরীর থেকে শাড়ি খুলে ফেলা হয়েছে। সেটাতে কেন রক্তক্ষরণ হচ্ছে না? রক্তক্ষরণ শুধু আমাদের সুপারিশেই হচ্ছে? এই রিট তাদের (সমালোচনাকারীদের) আরও সাহস দিচ্ছে।’
আইনজীবী রওশন আলী বলেন, ‘এটাকে (রিট) আনবর্ন চাইল্ড বলা হচ্ছে। অথচ প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, সুপারিশের মধ্যে যা দ্রুত বাস্তবায়নযোগ্য, তা যেন করা হয়। পরবর্তী সংসদ করবে, সেটা বলা হয়নি। বলা হচ্ছে, দ্রুত করে ফেলতে হবে। তাই এই রিটকে ইমম্যাচিউর (অপরিপক্ব) বলব কীভাবে? যে সুপারিশগুলো ধর্মীয় অনুভূতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক, শুধু সেগুলো নিয়ে এসেছি। অনেক বিষয় উচ্চ আদালতে নিষ্পত্তি হওয়া।’