বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সারা দেশে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায়ের পর্যবেক্ষণে ট্রাইব্যুনাল বলেছেন, জুলাই-আগস্টে নিরস্ত্র বেসামরিক নাগরিকদের ওপর আক্রমণ চালানো হয়েছিল। আক্রমণ চালানো হয়েছিল ব্যাপক মাত্রায় ও পদ্ধতিগতভাবে। সেই আক্রমণে মানবতাবিরোধী অপরাধের সব উপাদান বিদ্যমান ছিল।
গতকাল সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এমন পর্যবেক্ষণ দেন। ট্রাইব্যুনাল বলেন, দেশের কোথায় কত লোক মারা গেছে, কী অস্ত্র ব্যবহার হচ্ছে—সব এই অপরাধীরা জানতেন। তাঁরা জেনে-বুঝে এটা করেছেন। এই মামলায় ৫৪ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। সংখ্যা হিসাবে এটি মোটেও কম নয়।
পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, আসামি (শেখ হাসিনা) বিচার চলমান অবস্থায় মামলার সাক্ষী, বিচারক এবং ট্রাইব্যুনালের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের হত্যা করার, তাঁদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন। সেই দায়ে আসামি শেখ হাসিনার ছয় মাসের কারাদণ্ড হয়েছে।
তাই এটা প্রমাণিত যে, হুমকি-ধমকিতে বাংলাদেশের জনগণ, প্রশাসন, এই বিচারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কেউই ভয় পাননি।
ট্রাইব্যুনাল বলেন, আওয়ামী লীগ-যুবলীগ সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে সাবমিশন ছিল। তাদের বিষয়ে তদন্ত চলমান রয়েছে। দল হিসেবে বিচারের বিষয়টি আলাদা মামলায় বিচার্য হতে পারে। যেহেতু আজকের এই মামলায় এটি বিচার্য বিষয় নয়, তাই এই বিষয়ে কোনো পর্যবেক্ষণ দেননি ট্রাইব্যুনাল।
ট্রাইব্যুনাল আরও বলেন, জুলাই-আগস্টে মানবাধিকারের গুরুতর লঙ্ঘন হয়েছে। যেসব ভিডিও ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করা হয়েছে, তা দেখে যেকোনো সুস্থ মানুষ স্বাভাবিক থাকতে পারবেন না।