অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক দূত লুৎফে সিদ্দিকী বলেছেন, ‘সিঙ্গাপুর ও ভিয়েতনামের মতো দেশগুলো পর্যটনকেন্দ্রিক অর্থনীতি গড়ে তুলেছে। বাংলাদেশেও পর্যটন খাতকে অগ্রাধিকার দিলে জিডিপিতে বড় অবদান রাখা সম্ভব। আমাদের দেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও ঐতিহ্য কাজে লাগিয়ে এ খাতকে শক্তিশালী করা যেতে পারে।’
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘বিমান বাংলাদেশ ট্রাভেল অ্যান্ড টুরিজম ফেয়ার-বিটিটিএফ ২০২৫’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘ট্যুরিজম সেক্টর যুব সমাজের মেধা বিকাশ ও কর্মসংস্থানের এক বিশাল ক্ষেত্র। এটি শুধু সংস্কৃতি ও জ্ঞান বিনিময়ের সুযোগই তৈরি করে না, দেশের অর্থনীতিতেও বড় অবদান রাখতে পারে।’
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (টোয়াব) ট্যুর অ্যান্ড ফেয়ার বিভাগের পরিচালক মো. তাসলিম আমিন শুভ বলেন, বিটিটিএফ এখন বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের ব্র্যান্ড ইভেন্টে পরিণত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ড. মো. শফিকুর রহমান, বাংলাদেশ ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি মো. মাইনুল হাসান, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের সিইও নুজহাত ইয়াসমিন এবং বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান সায়মা শাহিন সুলতানা।
নুজহাত ইয়াসমিন বলেন, ‘ট্যুরিজম এখন আর শখ নয়, এটি একটি পেশা এবং দেশের অর্থনীতিতে সরাসরি অবদান রাখছে। এই সেক্টরে লাখো মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে।’
সায়মা শাহিন সুলতানা বলেন, ‘পর্যটনের মাধ্যমে আমরা দেশের পণ্য ও সেবাকে বিশ্বব্যাপী পরিচিত করতে পারছি, যা অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে।’
টোয়াবের প্রেসিডেন্ট মো. রাফিউজ্জামান অনুষ্ঠানের সমাপনী বক্তব্য রাখেন।
টোয়াব আয়োজিত ১৩তম আন্তর্জাতিক পর্যটন মেলায় টাইটেল স্পনসর হিসেবে রয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস লিমিটেড। তিন দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক পর্যটন মেলা চলবে আগামী শনিবার (১ নভেম্বর) রাত ৮টা পর্যন্ত। এবারের মেলায় অংশ নিচ্ছে পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপ, সিঙ্গাপুর, ভিয়েতনাম, সংযুক্ত আরব আমিরাত, চীন, শ্রীলঙ্কা, তুরস্কের জাতীয় পর্যটন সংস্থা এবং ট্যুর অপারেটরেরা।
মেলায় ৪টি হলে ২০টি প্যাভিলিয়নসহ মোট ২২০টি স্টল রয়েছে। এতে আন্তর্জাতিক ও দেশি এয়ারলাইনস, ট্যুরিজম বোর্ড, ট্রাভেল এজেন্সি, হোটেল, রিসোর্ট, ক্রুজ লাইনার ও হাসপাতালসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান প্রদর্শক হিসেবে অংশ নিচ্ছে।
মেলার সাইড ইভেন্টে রয়েছে বিটুবি সেশন, সেমিনার, কান্ট্রি প্রেজেন্টেশন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং পর্যটন গন্তব্যের ওপর প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী। এ ছাড়া বিটিটিএফ অ্যাপ ব্যবহারকারীদের জন্য থাকবে আকর্ষণীয় র্যাফেল ড্র, প্রবেশ মূল্যের ওপর বিকাশ ক্যাশব্যাক অফার এবং পর্যটন সচেতনতা ও টেকসই উন্নয়ন বিষয়ে বিশেষ প্রদর্শনী।
মেলার সার্বিক সহযোগিতায় রয়েছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড, বাংলাদেশ ট্যুরিস্ট পুলিশ, ন্যাশনাল স্কিলস ডেভেলপমেন্ট অথরিটি ও ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)।
মেলায় প্রবেশ মূল্য রাখা হয়েছে ৫০ টাকা। তবে ছাত্র-ছাত্রী, মুক্তিযোদ্ধা ও জুলাই যোদ্ধাদের জন্য প্রবেশ ফ্রি।