ঢাকা: দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের স্থিতি রেকর্ড ৪৬ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করেছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের (প্রবাসী আয়) উচ্চ প্রবাহ এবং রপ্তানি আয়ের কারণে রিজার্ভের এ রেকর্ড সম্ভব হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকে রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৬ দশমিক শূন্য ৮২ বিলিয়ন ডলার, যা অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। প্রতি মাসে চার বিলিয়ন ডলার হিসাবে দেশের এ রিজার্ভ দিয়ে ১১ মাসের বেশি সময়ের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, একটি দেশের কাছে তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ থাকতে হয়।
জানা গেছে, চলতি মাসে জুনের শুরু থেকে ২৮ তারিখ পর্যন্ত ১৭৫ কোটি ২০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। যা ২০২০ সালের একই মাসের থেকে ১০ কোটি ডলার বেশি। গত ২০২০ সালের জুন মাসে দেশে প্রবাসী আয় এসেছিল ১৬৫ কোটি ৯০ লাখ ডলার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, অর্থবছরের শুরু থেকে দেশে ২৮ জুন পর্যন্ত দুই হাজার ৪৫৮ কোটি ৯০ লাখ ডলার প্রবাসী আয় এসেছে। আগের বছরের তুলনায় এ বছর রেমিট্যান্স প্রবৃদ্ধির হার ৩৬ দশমিক ৪০ শতাংশ বেশি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তা জানান, আসন্ন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে প্রবাসীরা বিপুল পরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। প্রতি বছর দুই ঈদের আগে অন্য সব মাস থেকে রেমিট্যান্স বেশি পাঠান প্রবাসীরা।
এর আগে গত ২৪ জুন বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৫ দশমিক ৫৯ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছায়। ১ জুন প্রথমবারের মতো বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়ায় ৪৫ দশমিক ৫৪ বিলিয়ন ডলারে। তার আগে ৩ মে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৫ দশমিক ১০ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছিল। আর গত ২৪ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ ছিল ৪৪ দশমিক শূন্য দুই বিলিয়ন ডলার। আর ২০২০ সালের ৩০ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ ছিল ৪৩ বিলিয়ন ডলার, ১৫ ডিসেম্বর ৪২ মিলিয়ন এবং ২৮ অক্টোবর রিজার্ভ ৪১ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছিল।
অন্যদিকে রিজার্ভ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে রপ্তানি আয়েরও বড় প্রভাব রয়েছে। চলতি বছরের ১১ মাসে (জুলাই-মে) পণ্য রপ্তানি বাবদ ৩৫ দশমিক ১৮ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে বাংলাদেশ। যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ১৩ দশমিক ৬৪ শতাংশ বেশি। ২০২০ সালের প্রথম ১১ মাসে বাংলাদেশ তিন হাজার ৯৫ কোটি ৯১ লাখ (৩০ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন) ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছিল।