বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) ভেতরে নতুন বাহিনী গঠনের প্রস্তাব নিয়ে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। কর্মকর্তারা মনে করছেন, নতুন বাহিনী গঠন বেবিচকের এভিয়েশন সিকিউরিটি (এভসেক) বিভাগের অস্তিত্বের ওপর হুমকি তৈরি করবে। এ নিয়ে বেবিচকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।
বেবিচকের কর্মকর্তা-কর্মচারী ফোরামের নেতারা আজকের পত্রিকাকে জানান, আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১৫ মার্চ) সকাল ৯টায় বেবিচকের চেয়ারম্যানের কাছে ১২ দফা দাবিসংবলিত একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হবে। এর মধ্যে প্রধান দাবিগুলো হলো—বেবিচকের অধীনে এভিয়েশন সিকিউরিটি বিভাগের অধিকার সংরক্ষণ, নতুন নিরাপত্তা বাহিনী গঠনের প্রস্তাব বাতিল, বেবিচকের নিজস্ব জনবল দিয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং প্রেষণে নিয়োগ বন্ধ করা।
প্রসঙ্গত, দেশের বিমানবন্দরগুলোর নিরাপত্তা জোরদারের উদ্দেশ্যে ‘বাংলাদেশ এয়ারপোর্ট সিকিউরিটি ফোর্স’ (বিএএসএফ) নামে একটি নতুন বাহিনী গঠনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রস্তাব অনুযায়ী, এই বাহিনীর সদস্যসংখ্যা হবে ১০,৬৩২ জন, যার মধ্যে ৭০ শতাংশ জনবল বাংলাদেশ বিমানবাহিনী থেকে নেওয়া হবে।
এর প্রতিবাদে গত ১৭ মার্চ বেবিচকের প্রধান কার্যালয় প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই সময়ে বিক্ষোভকারীরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের এক পাশ বন্ধ করে দিলে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
বেবিচকের কর্মকর্তারা বলেন, বর্তমানে বেবিচকের অধীনে এভসেক বিভাগ অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে। তাই নতুন একটি বাহিনী গঠনের কোনো যৌক্তিকতা নেই। এটি এভসেক বিভাগের অস্তিত্বের ওপর সরাসরি হুমকি তৈরি করবে।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে বেবিচকের কাঠামোগত সমস্যাবলি, অর্গানোগ্রামের অসংগতি, পদোন্নতির অনিশ্চয়তা, নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের চাকরি স্থায়ীকরণের অনিশ্চয়তা এবং প্রয়োজনীয় ভাতা ও সুযোগ-সুবিধার অভাব নিয়ে কর্মকর্তাদের মধ্যে পেশাগত অসন্তোষ রয়েছে।
বেবিচকের একাধিক কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছেন, সারা বিশ্বে সিভিল এভিয়েশন সংস্থাগুলো বেসামরিক কর্মীদের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। বাংলাদেশেও এই রীতি বজায় রাখা উচিত। নতুন নিরাপত্তা বাহিনী গঠনের প্রস্তাব সিভিল কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে এবং এভিয়েশন সেক্টরে অস্থিরতা বাড়ছে।