বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ভয়াবহ পৃথিবীতে জীবন তথা মানবতার জয়গান গাইবার অনুপ্রেরণা দিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা চৌধুরী রফিকুল (সি আর) আবরার।
রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তী উদ্যাপন উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস প্রশাসন একাডেমি (বিসিএসএএ) আয়োজিত এক আলোচনা সভায় শিক্ষা উপদেষ্টা এই মন্তব্য করেন। রাজধানীর শাহবাগে একাডেমির অডিটোরিয়ামে এই সভায় তিনি প্রধান অতিথি ছিলেন।
‘দৈশিক ও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল পাঠ’ শীর্ষক আলোচনায় শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল দুজনই জীবনঘনিষ্ঠ কবি ছিলেন। জীবনঘনিষ্ঠ বলেই তাঁরা মানুষের চিরকল্যাণ ও মনুষ্যত্বের বিকাশের কথা বলেছেন।’
বর্তমানে মানুষ তাঁদের কর্তব্য পালনে উদাসীন, নিষ্ক্রিয় ও ব্যর্থ উল্লেখ করে সি আর আবরার বলেন, একজনের প্রতি অন্যজনের মানবিক সহানুভূতি, সহমর্মিতা আজ বিলুপ্তপ্রায়। নিজের ক্ষুদ্র স্বার্থে অপরকে নির্যাতিত ও নিপীড়িত করতে আমরা কুণ্ঠাবোধ করি না, দ্বিধান্বিত হই না। বিশ্বের চারদিকে আজ রণদামামা বেজে উঠেছে। এর ফলে লাঞ্ছিত হচ্ছে মানুষ, বিপন্ন হচ্ছে মানবতা।
এই নৈরাজ্য ও অমানবিক পরিবেশের বিরুদ্ধেই নজরুল রণ হুংকার দিয়েছিলেন এবং রবীন্দ্রনাথ চরম বিপর্যয়ের মধ্যেও মানুষের কল্যাণবোধের প্রতি আস্থা হারাতে চাননি বলে মন্তব্য করেন উপদেষ্টা।
সি আর আবরার বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল এই ভয়াবহ পৃথিবীতে জীবনের জয়গান গাইবার অনুপ্রেরণা দিয়েছেন আমাদের। এই জন্যই এই দুই কবি আমাদের জন্য আজও সমান প্রাসঙ্গিক। তাঁদের রচনার মানবিক আবেদনে উদ্বুদ্ধ হওয়ার জন্য তাঁদের পাঠ-অধ্যয়ন আমাদের জন্য আবশ্যিক।’
উপদেষ্টা সভায় ব্যক্তিগত জীবনে রবীন্দ্র ও নজরুলের সাহিত্য থেকে প্রেরণা প্রাপ্তির অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন।
বিসিএস প্রশাসন একাডেমির রেক্টর (সচিব) মো. ওমর ফারুকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আলোচক ছিলেন প্রাবন্ধিক ও গবেষক মোরশেদ শফিউল হাসান, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের ডিসেমিনেশন অব নিউ কারিকুলাম স্কিমের উপপরিচালক কুদরত-ই-হুদা।