ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে চলতি মাসের ১৮ দিনে ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত ও হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৪ হাজারের বেশি। সর্বশেষ গত ২৪ ঘণ্টায় ৩০৬ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমারজেন্সি সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে গতকাল বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৩০৬ জন। এদের মধ্যে ঢাকায় ভর্তি হয় ২৭৩ ও ঢাকার বাইরে ৩৩ জন। আগের দিন ভর্তি হয়েছিল ৩২৯ জন। তবে গত দুই সপ্তাহ রোগী শনাক্ত ছিল দুই শতাধিক। হঠাৎ করে গত দুই দিন তিন শতাধিক রোগী শনাক্ত হচ্ছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, দেশে চলতি মাসের ১৮ দিনে ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে ৪ হাজার ২৯৮ জন। চলতি মাসে ডেঙ্গুতে মারা গেছে ১৮ জন। আর গত জুলাইয়ে শনাক্ত ও ভর্তি হয়েছিল ২ হাজার ২৮৬ জন, মৃত্যু হয়েছিল ১২ জনের।
সূত্র জানায়, মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালে ৬০, ঢাকা শিশু হাসপাতালে ২৩, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ১৬, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৭ জন, বিজিবি হাসপাতাল ও কুর্মিটোলায় ১ জন করে নতুন রোগী ভর্তি হয়।
চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১৮ আগস্ট পর্যন্ত মোট ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয় ৬ হাজার ৯৫৬ জন। এদের মধ্যে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছে ৫ হাজার ৭৩৩ জন। দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছে ১ হাজার ১৯৩ জন। আর রাজধানীর ৪১টি সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছে ১ হাজার ১১০ জন এবং ঢাকার বাইরে ভর্তি ৮৩ জন। সরকারি হিসাবে চলতি বছর ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। রাজধানীর সরকারি ১২টি ও বেসরকারি ৩০ হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা চলছে। অধিকাংশ রোগীই বেসরকারি হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিচ্ছে।
ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ড. বে-নজির আহমেদ বলেন, এডিস মশা দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। সিটি করপোরেশন বিষয়টি নিয়ে চেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু তারা এখনো সফল হতে পারেনি। তাদের সফল হতে হলে স্থানীয় জনগণকে সম্পৃক্ত করতে হবে। সিটি করপোরেশনের কীটতত্ত্ববিদের সংখ্যা কম। কীটতত্ত্ববিদদের নিয়ে যেসব এলাকায় লার্ভা রয়েছে, তা চিহ্নিত করে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।