রাজউকের পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর বোন শেখ রেহানা ও রেহানার বড় মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিকসহ অন্যদের বিরুদ্ধে করা মামলার রায় ঘোষণা করা হবে আগামী ১ ডিসেম্বর। আজ মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারক মো. রবিউল আলম এই দিন ধার্য করেন।
এ নিয়ে পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে শেখ হাসিনা, তাঁর পরিবারের সদস্যসহ অন্যদের বিরুদ্ধে করা ছয়টি মামলার মধ্যে চতুর্থ মামলার রায়ের দিন ধার্য করা হলো।
প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে শেখ হাসিনা, তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ অন্যদের বিরুদ্ধে করা তিন মামলার রায়ের দিন ধার্য রয়েছে ২৭ নভেম্বর (পরশু বৃহস্পতিবার)। এই তিন মামলাতেই শেখ হাসিনা আসামি। ২৩ নভেম্বর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এই তারিখ ধার্য করেন।
শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা ও টিউলিপ সিদ্দিকসহ অন্যদের বিরুদ্ধে করা মামলাটিতে আজ যুক্তিতর্ক শুনানি হয়। এই মামলার ১২ আসামির মধ্যে শুধু রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সাবেক সদস্য (ভূমি ও এস্টেট) খুরশীদ আলম কারাগারে আছেন। তিনি আদালতে আত্মসমর্পণ করেছিলেন। বাকিরা পলাতক। টিউলিপ সিদ্দিক ব্রিটিশ এমপি।
আজ খুরশীদ আলমের পক্ষে আইনজীবী শাহিনুর ইসলাম যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। শুনানি শেষে রায়ের তারিখ ধার্য করেন বিশেষ জজ আদালত-৪।
দুদকের বিশেষ পিপি তরিকুল ইসলাম ওই মামলায় রায়ের দিন ধার্য হওয়ার বিষয়টি আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেন।
বিশেষ জজ আদালত-৪-এ প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে করা আরও দুটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এই দুটি মামলায় আজ সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য ছিল। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ না হওয়ায় এর মধ্যে শেখ হাসিনা, শেখ রেহানার ছোট মেয়ে আজমিন সিদ্দিকসহ অন্যদের বিরুদ্ধে করা মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ৩০ নভেম্বর এবং শেখ হাসিনা, রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববিসহ অন্যদের বিরুদ্ধে করা মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ১ ডিসেম্বর দিন ধার্য করা হয়েছে।
চলতি বছরের ৩১ জুলাই একই আদালত এই তিন মামলায় শেখ হাসিনাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।
পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের ২৭ নম্বর সেক্টরের ২০৩ নম্বর সড়কে শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, জয়, পুতুল, ববি ও আজমিনের নামে প্রতিটি ১০ কাঠা করে ছয়টি প্লট বরাদ্দে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে গত ১২,১৩ ও ১৪ জানুয়ারি দুদক এই ছয়জন, টিউলিপসহ অন্যদের বিরুদ্ধে ৬টি মামলা করে। গত ২৫ মার্চ এই ছয় মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দেয় দুদক। অভিযোগপত্রে শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সদস্যরাসহ ২৮ আসামি। শেখ হাসিনা ও রাজউকের কয়েক কর্মকর্তা প্রতিটি মামলায় আসামি।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, সরকারের সর্বোচ্চ পদে থাকাকালে শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবার ক্ষমতার অপব্যবহার করেন। তাঁরা বরাদ্দ পাওয়ার যোগ্য না হওয়া সত্ত্বেও অসৎ উদ্দেশ্যে পূর্বাচলে ৬টি প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
মামলায় আরও অভিযোগ করা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতার অপব্যবহার করে, অপরাধজনক বিশ্বাস ভঙ্গ করে প্রকল্পের বরাদ্দবিষয়ক দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মচারীদের বা রাজউকের কর্মচারীদের প্রভাবিত করে প্লট বরাদ্দ নিয়েছেন। টিউলিপ সিদ্দিক তাঁর মা ও ভাই-বোনদের প্লট বরাদ্দে বিশেষ ক্ষমতাবলে প্রত্যক্ষ প্রভাব খাটিয়েছেন। অন্যদিকে রাজউকের প্রকল্প বরাদ্দবিষয়ক কর্মচারীরা নিজেরা লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যে নিয়মবহির্ভূতভাবে প্লট বরাদ্দ দিয়েছেন।