আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে পুলিশকে কোনো রাজনৈতিক দলের নেতাদের তেল দিতে নিষেধ করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। আজ রোববার রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইনে আয়োজিত নির্বাচনি প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এই কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘রাজনৈতিক কোনো দলকে বিশেষ সুবিধা প্রদান বা নিজেকে রাজনৈতিক কর্মী ভাববেন না। মনে রাখবেন পেশিশক্তি কখনো শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারে না। আপনাদের সব কাজ জনস্বার্থে এবং আইন দ্বারা পরিচালিত হয়। আপনাদের আমি বলছি, আপনারা রাজনৈতিক দল থেকে দূরে থাকবেন। আমি বারবার আপনাদের বলছি, আপনারা এখন যদি তেল দেওয়া শুরু করে দেন তাহলে আপনাদের তেল কিন্তু নির্বাচনের পর শেষ হয়ে যাবে।’
তিনি বলেন, ‘এখন যার কাছে যে তেলটা আছে রিজার্ভ করে রাখেন। পরে কিন্তু তেলটা কাজে লাগাতে পারবেন। এজন্য আপনারা কোনো দলের দিকে যাবেন না। আপনারা জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ করার চেষ্টা করবেন।’
পুলিশ সদস্যদের ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচন মাথা থেকে মুছে ফেলতে বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
তিনি আরও বলেন, ‘আরেকটি অনুরোধ, আপনারা সমাজ থেকে দুর্নীতি এবং মাদক এটা কমাতে পারেন কিনা। আপনারা যদি সহযোগিতা করেন এটা আমরা সমাজ থেকে কমাতে পারব। যদিও আমাদের সময় খুব একটা নাই, আমরা সেকেন্ড স্টেজে। আমরা এখন ইলেকশন মডিউলে চলে গেছি। তারপরও নির্বাচনের সাথে সাথে এই জিনিসটা আপনাদের খেয়াল রাখতে হবে।’
পুলিশ ইচ্ছা করলে পারে না তা নয় উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘এবার আপনারা জাতিকে দেখিয়ে দিছেন, পুলিশ একটা ফেয়ার নিয়োগ করতে পারে। সাংবাদিকেরা অনেক সময় ছোটখাট বিষয়ে অনেক কিছু বলে, এবার নিয়োগ সমন্ধে তারা কিন্তু কিছু বলতে পারে নাই। এখন বলার পরে তারা ছোটখাটো ভুল ধরবে কি না আমি জানি না। নিয়োগটা নিরপেক্ষ হয়েছে। আমি আইজিপি বা কারোর কাছে নিয়োগের জন্য একটা নামও দেইনি। আমাদের মন্ত্রণালয় থেকেও কেউ দেয় নাই। এজন্য নিয়োগ প্রক্রিয়াটা খুব ভালোভাবে করতে পেরেছেন। পোস্টিংয়ের ক্ষেত্রে আমি সব পারি নাই। যেহেতু পারি নাই, এজন্য বলছি নির্বাচনের আগে এটা আমি লটারির মাধ্যমে করে দেব। যেটা আমি প্রতিজ্ঞা করেছি, অন্তত একটা যেন আমি করতে পারি। এটাতে অনেক প্রতিবন্ধকতা, বাধা আসবে। আমি কারও কোনো কথা শুনব না। এটা আমি লটারির মাধ্যমেই হবে যদি আমি থাকি।’
পরে লিখিত বক্তব্যে পুলিশের নির্বাচনী প্রশিক্ষণ নিছক কোনো প্রশিক্ষণ নয় উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, পুলিশের নির্বাচনী প্রশিক্ষণ নিছক কোনো প্রশিক্ষণ নয় বরং রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় দীর্ঘদিনের অগণতান্ত্রিক, স্বৈরতান্ত্রিক, একনায়কতন্ত্র ও ফ্যাসিবাদ বিলোপের গণতন্ত্রের ভিত্তি ও পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং তা রক্ষার জন্য একটি ঐতিহ্যবাহী, সুশৃঙ্খল, পেশাদার, প্রশিক্ষিত, সুসজ্জিত দেশপ্রেমিক পুলিশ বাহিনী সংযুক্ত হওয়ার দৃঢ় প্রত্যয়।