হেমন্তের রোদ বা বাতাস; যা-ই বলুন না কেন, ত্বক কেমন যেন শুষ্ক করে তোলে। রোজকার ব্যবহৃত ময়শ্চারাইজার বা লোশনে যেন তৃষ্ণা মেটে না ত্বকের। শুষ্ক ত্বক যাঁদের, তাঁরা এ সময় একটু বেশি ঝামেলায় পড়েন। লোশন মাখার কিছুক্ষণ পরই ত্বকে টান ধরে। ত্বকের তৃষ্ণা মেটাতে এবং পুষ্টি জোগাতে এ সময় অনেকে বিভিন্ন ধরনের তেলের ব্যবহার পছন্দ করেন। আজকাল বাজারে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের আমন্ড অয়েল পাওয়া যায়। এই তেল ত্বক, চুল—দুয়ের জন্য খুবই ভালো। অল্প দিন ব্যবহারেই ত্বক ও চুল ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে ওঠে। রূপবিশেষজ্ঞরা তাই পরামর্শ দেন শীতে ত্বকের শুষ্কতা বা ফাটা দূর করতে আমন্ড অয়েল ব্যবহারের।
ত্বকের যত্নে জাদুকরি ভূমিকা
আমন্ড অয়েল প্রাকৃতিক ময়শ্চারাইজার হিসেবে পরিচিত। এটি ত্বকের সেরাম হিসেবে খুব ভালো কাজ করে। এ ছাড়া এই তেলে রয়েছে ফ্যাটি অ্যাসিড, যা ত্বকের প্রদাহ কমাতে এবং যেকোনো সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
আমরা অনেকে সানবার্ন কিংবা রোদে পোড়া দাগের সমস্যায় ভুগি। কাঠবাদাম অথবা আমন্ড অয়েলে থাকা ভিটামিন ‘ই’ এর সহজ সমাধান দেবে। সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মির ক্ষতিকর প্রভাব এবং রুক্ষ হয়ে যাওয়া হাতের ত্বক রক্ষা করতে আমন্ড অয়েল বেশ উপকারী বলে পরিচিত। নিয়মিত আমন্ড অয়েল ব্যবহারে ত্বকের কালো দাগগুলো হালকা হতে থাকবে।
বিভিন্ন ধরনের ফেসপ্যাকেও আমন্ড অয়েল ব্যবহার করা যায়। অল্প পরিমাণে মধু ও টক দইয়ের সঙ্গে ৪-৫ ফোঁটা আমন্ড অয়েল মিশিয়ে ত্বকে ব্যবহার করলে বেশ উপকার পাবেন। এটি ভালো একটি স্ক্রাব। দুপুরে ভাতঘুমের আগে আমন্ড অয়েল ও মধু মিশিয়ে ত্বকে মাস্ক হিসেবে ব্যবহার করলে বলিরেখা দূর হবে।
চোখের নিচের ফোলা ভাব কিংবা ডার্ক সার্কেল দূর করার জন্য আমন্ড অয়েলে কটন বল ডুবিয়ে ঘুমাতে যাওয়ার আগে চোখের চারপাশে ম্যাসাজ করে নিতে পারেন।
চুলের যত্নেও কার্যকরী
এই ঋতুতে খুশকির সমস্যা থেকে দ্রুত রেহাই পেতে নিম তেলের সঙ্গে সমান অনুপাতে আমন্ড অয়েল মিশিয়ে নিন। এ মিশ্রণ রাতে ভালো করে মাথার ত্বকে ম্যাসাজ করুন। এরপর সকালে ভালো করে শ্যাম্পু করে নিন। খুশকি দূর হবে, আবার চুলও ঝলমল করবে। কাঠবাদাম বা আমন্ডে ফ্যাটি অ্যাসিডের সঙ্গে নানা রকম ভিটামিন থাকে। এই ভিটামিনগুলো চুল নরম, স্ট্রেট ও সিল্কি রাখতে সাহায্য করে। এই তেল গোড়া থেকে পুষ্টি জুগিয়ে চুল শক্ত ও মজবুত করে।
শুধু আমন্ড অয়েল আঙুলের ডগায় নিয়ে মাথার ত্বকে ভালোভাবে ম্যাসাজ করুন। এই তেল মাথার ত্বকের মৃত কোষ এবং খুশকি নরম করতে সাহায্য করে। তাই সকালে শ্যাম্পু করে নিলে খুশকি, মৃত কোষ ও ময়লা সব ধুয়ে মাথার ত্বক পরিষ্কার হয়ে যাবে।
আমন্ড অয়েলের সঙ্গে নারকেল তেল, ক্যাস্টার অয়েল ও মেথিগুঁড়া মিশিয়ে নিন। সপ্তাহে অন্তত দুই দিন এই মিশ্রণ মাথার ত্বকে ভালোভাবে ম্যাসাজ করলে চুলের গোড়া শক্ত হবে এবং চুল দ্রুত বড় হবে।
১টি ডিমের কুসুমের সঙ্গে ১ টেবিল চামচ মধু এবং ১ টেবিল চামচ আমন্ড অয়েল মিশিয়ে চুলের গোড়ায় ভালো করে লাগিয়ে রাখুন ২০ মিনিট। এরপর গরম পানিতে একটি তোয়ালে ডুবিয়ে তা থেকে পানি চিপে নিন। গরম ভাপযুক্ত এই তোয়ালে পুরো মাথায় ভালো করে পেঁচিয়ে রাখুন ৪-৫ মিনিট। তারপর শ্যাম্পু করে নিন। সপ্তাহে অন্তত এক দিন যদি এই মিশ্রণ ব্যবহার করেন, তাহলে নতুন চুল গজাতে এবং চুল পড়া কমতে সহায়তা করবে।
সূত্র: ফেমিনা ও অন্যান্য