দীর্ঘ মেয়াদে ওজন কমানো বা বাড়ানোর পরিকল্পনা করতে চাইলে নিয়মিত ওজন মাপার প্রয়োজন আছে। তবে ওজন মাপার মেশিনে দাঁড়ালে নিজের ওজন প্রতিদিন এক রকম দেখা যায় না। তা শূন্য দশমিক ৫৭ থেকে ৩ দশমিক ২ পাউন্ড পর্যন্ত ওঠানামা হওয়া স্বাভাবিক। এটি দেখে ভয় পাওয়া বা হতাশ হওয়ার কিছু নেই। এটি শরীরের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া, যা মোটেও আপনার চর্বি কমা বা বাড়ার ফল নয়। প্রতিদিন এই ওজন ওঠানামার কিছু কারণ জেনে নিন।
দিনের কোন সময়ে ওজন মাপছেন
সারা দিন শরীর এক অবস্থায় থাকে না। সারা রাত খাবার খাওয়া হয় না, পানিও কম পান করা হয় বলে সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর শরীর তুলনামূলকভাবে বেশি হালকা থাকে। দিন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আপনি খাবার খান, পানি পান করেন, শরীরে গ্লাইকোজেন জমে, লবণ খান, হজমের প্রক্রিয়া চলে, ঘাম ঝরে। ফলে ওজন কমবেশি হওয়া স্বাভাবিক। অনেকে দুপুর বা সন্ধ্যায় ওজন মাপেন। তখন ওজন বেশি দেখায় বলে ভাবেন, তাঁরা মোটা হয়ে গেছেন। আসলে সময়ভেদে এই পরিবর্তন স্বাভাবিক। প্রতিদিন একই সময় ওজন মাপলে তুলনাটা বোঝা সহজ। তবে প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, সকালে টয়লেট ব্যবহারের পর এবং নাশতার করার আগে ওজন মাপানো ভালো।
সারা দিনে কী খেয়েছেন
আপনার খাবারের উপাদান সাময়িকভাবে শরীরে পানি ধরে রাখে এবং গ্লাইকোজেন বাড়ায়।
শর্করা: অতিরিক্ত শর্করা খেলে শরীরে গ্লাইকোজেন জমে। প্রতি গ্রাম গ্লাইকোজেনের সঙ্গে প্রায় ৩ গ্রাম পানি জমে। ফলে হঠাৎ ওজন বাড়ে।
লবণ: বেশি লবণ শরীরে পানি ধরে রাখে; বিশেষ করে প্যাকেটজাত খাবার, ফাস্ট ফুড, রেস্টুরেন্টের খাবার খেলে ওজন সাময়িকভাবে বেড়ে যেতে পারে।
ভারী খাবার: যেসব খাবার হজম হতে সময় নেয়, সেগুলো পাকস্থলী ও অন্ত্রে থাকা অবস্থায় শরীরের মোট ওজন বাড়িয়ে রাখে।
এসব পরিবর্তনকে অনেকে চর্বি বাড়া বলে ভুল করেন। কিন্তু এগুলো আসলে অস্থায়ী। খাবার হজম হয়ে বেরিয়ে গেলে ওজন আবার কমে যায়।
শরীরে পানির পরিমাণ
শরীরের বেশি অংশই পানি। বয়স, পরিবেশ, কর্মকাণ্ড, খাবার এবং শরীরের হরমোন—সবকিছুর প্রভাবেই পানির পরিমাণ ওঠানামা করে।
হরমোনের প্রভাব
হরমোন শরীরের ওজন পরিবর্তনে গভীর ভূমিকা রাখে।
মলত্যাগ কম বা বেশি হওয়া
দৈনিক ওজন ওঠানামা বা কমবেশি হওয়া একেবারে স্বাভাবিক। বেশির ভাগ সময় এটি শরীরের চর্বির পরিবর্তনে হয় না। খাবার, পানি, ঘুম, হরমোন, ব্যায়াম, এমনকি আবহাওয়াও এতে প্রভাব ফেলে। তবে হঠাৎ দ্রুত ওজন বাড়া বা কমা যদি দীর্ঘদিন চলতে থাকে এবং কারণ খুঁজে না পান, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া ভালো।
সূত্র: হেলথ