হোম > জীবনধারা

বৃষ্টিতে বাইকের ভালো-মন্দ

মেহরাব মাসাঈদ হাবিব

জ্যৈষ্ঠের খরতাপ রেহাই দিচ্ছে না। এর ওপর বুঝে ওঠার আগেই আকাশ ভেঙে ঝরঝর নামে বৃষ্টি। একটা অলিখিত প্রস্তুতি নিয়েই বাইরে বের হতে হয়। ছাতা বা রেইনকোট তো রাখতেই হবে। নইলে বিপত্তি। এর ওপর আপনার যদি থাকে বাইক বা স্কুটি, তাহলে বাড়তি প্রস্তুতি নিয়েই বের হতে হবে। তা ছাড়া সামনে আসছে বর্ষাকাল। যেকোনো সময়ই নামতে পারে মুষলধারে বৃষ্টি। আবার বৃষ্টির পরেই পড়তে পারে তীব্র গরম। বৃষ্টি আর গরম এই দুটিকে সামাল দিয়ে বাইকারদের বাইক ও স্কুটি চালানোর সময় অনেক বিষয় লক্ষ রাখা উচিত। এই সময়ে মোটরসাইকেল রক্ষণাবেক্ষণ, চালানো, চালক ও আরোহীর পোশাক, জুতা–সবই হওয়া উচিত আবহাওয়ার সঙ্গে মানানসই।

উল্লেখ করতেই হয়, ঢাকায় এক জায়গা থেকে অন্য জায়গা কম সময়ে পৌঁছে দিতে সাহায্য করছে অ্যাপচালিত বাইকগুলো। ফলে বাইকের চালকসহ যাত্রীদেরও কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। না হলে যাত্রীরা সমস্যায় তো পড়বেনই, সঙ্গে মোটরসাইকেলও যেকোনো সময় নষ্ট হয়ে যেতে পারে বা ইঞ্জিন বসে যেতে পারে। মনে রাখবেন, বৃষ্টির দিনে ভেজা ও পিচ্ছিল রাস্তায় মোটরসাইকেল চালানো কিন্তু গরমের দিনের চেয়ে বেশ কঠিন। 

পার্কিং
বৃষ্টির দিনে মোটরসাইকেল পার্ক করতে হবে ছাদের নিচে, যাতে বৃষ্টির পানি না পড়ে। অথবা ওয়াটারপ্রুফ কভার দিয়ে মোটরসাইকেল ঢেকে রাখতে হবে। না হলে মোটরসাইকেলের সিট ভিজে যাবে এবং বলা বাহুল্য ভেজা সিটে কেউই বসতে চাইবে না। এ ছাড়া বৃষ্টির পানি সিট ভেজানো ছাড়াও অনেক সময় ইঞ্জিনের যন্ত্রাংশে জমে থাকতে পারে। ফলে দেখা দিতে পারে দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা। 

টায়ারে নজর
বর্ষাকালে রাস্তা পিচ্ছিল থাকে। এ জন্য বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে বাইকের টায়ারের দিকে। যদি টায়ারের রাবার ক্ষয় হয়ে যায়, তাহলে বর্ষাকাল শুরুর আগেই তা পাল্টে ফেলুন। মোটরসাইকেলের টায়ারের ট্রেডের গভীরতা যেন দুই মিলিমিটারের বেশি হয়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। এ ছাড়া টায়ারের প্রেশার ঠিক আছে কি না, সেটাও দেখতে হবে। 

ইঞ্জিনের দেখভাল
বর্ষাকালে যত্ন নিতে হবে মোটরসাইকেলের ইঞ্জিনেরও। মোটরসাইকেল ভিজে গেলে ইঞ্জিন বসে যেতে পারে এবং এর ফলে স্টার্ট হবে না। এ ছাড়া মোটরসাইকেলের ইলেকট্রিক সিস্টেম ভিজে গিয়ে শর্টসার্কিট হলেও ইঞ্জিন স্টার্ট হবে না। কাজেই ইঞ্জিনে যাতে পানি না ঢোকে, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। 

ব্রেক ঠিকঠাক
বৃষ্টিতে মোটরসাইকেলের যেসব যন্ত্রাংশ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, তার মধ্যে ব্রেক অন্যতম। বৃষ্টির ফলে অনেক সময় ব্রেক তার কর্মক্ষমতা হারায়। কাজেই বৃষ্টির দিনে বাইরে বের হওয়ার আগে ব্রেক চেক করে নিতে ভুলবেন না। যদি ডিস্ক ব্রেক থাকে আপনার বাইকে, তাহলে ডিস্কগুলো পরিষ্কার রাখবেন। 

হেডলাইট
বৃষ্টিতে মোটরসাইকেলের হেডলাইটে পানি ঢুকে সেটি নষ্ট হয়ে যেতে পারে। কাজেই নিজের নিরাপদ ভ্রমণের তাগিদে অবশ্যই হেডলাইট চেক করে নিতে হবে। 

চালকদের জন্য
চালক ও যাত্রীর নিরাপত্তা মোটরসাইকেলের চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। চালক হিসেবে আপনি যতক্ষণ নিরাপদ থাকবেন, ততক্ষণই মোটরসাইকেল নিরাপদে রাখতে পারবেন। কাজেই বাইক বা স্কুটি নিয়ে যখনই আপনি বৃষ্টির দিনে বের হবেন, অবশ্যই সঙ্গে হেলমেট রাখবেন। এটি যেকোনো দুর্ঘটনাজনিত আঘাত থেকে আপনার মাথা রক্ষা করবে। এ ছাড়া ভালো হ্যান্ড গ্লাভস পরে নিতে পারেন, যাতে হ্যান্ডেল গ্রিপ করতে সহজ হয়। বৃষ্টিতে ভেজা এবং ঠান্ডা লাগার হাত থেকে বাঁচতে ভালো মানের রেইনকোট ব্যবহার করুন। বাইকে পুরোনো তোয়ালে বা ওয়াইপার রাখুন। এতে বৃষ্টিতে সিট ভিজে গেলে মুছে নেওয়া যাবে। 

যাত্রীদের জন্য
যাঁরা নিয়মিত যাত্রী হিসেবে বাইক ব্যবহার করেন, তাঁদেরও কিছু দায়িত্ব রয়েছে।

  • নিজের জন্য একটি ভালো মানের রেইনকোট সঙ্গে রাখুন।
  • ভালো হয়, নিজের জন্য একটি হেলমেট কিনে নেওয়া, যেহেতু আপনি নিয়মিত বাইকে যাতায়াত করেন।
  • চালককে কোনোভাবেই দ্রুত বাইক চালাতে উৎসাহিত করবেন না।
  • বাইকের পেছনে বসে অযথাই নড়াচড়া করবেন না। তাতে চালকের সমস্যা হবে।

লেখক: ফাউন্ডার ও সিইও, বাংলা অটোমোবাইল স্কিলস

জীবনধারা সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

অনুষ্ঠিত হলো দেশের প্রথম এআইএমএস সার্টিফায়েড ৩০ কিলোমিটার ম্যারাথন

মানসিক সমস্যার কারণে চুলকানি হলে কী করবেন

বিলাসিতার স্বাদে মোড়া পৃথিবীর সবচেয়ে দামি খাবার

২০২৬ সালের জন্য এয়ারবিএনবি-এর পূর্বাভাস

আজকের রাশিফল: চায়ের বিল না দেওয়া বন্ধুদের সাহায্য করুন, সন্ধ্যার দিকে ভালো খবর

শীতকালে শুষ্ক ত্বকের যত্নের সহজ প্রতিকার

বিশ্বে বেশি উৎপাদন হয় কোন ৬টি ফল

পর্যটকের স্রোতে বিপর্যস্ত শহর

ত্বক টান টান আর উজ্জ্বল রাখতে চান? ব্যবহার করুন এই ঘরোয়া ফেসপ্যাকগুলো

বিমানযাত্রার অলিখিত নিয়মগুলো জেনে নিন