সেই আগের দিনে অনেকে ছোলা সেদ্ধ খেতেন। কেউ থানকুনিপাতা খেয়ে পরে জল বাতাসা খেতেন। উদ্দেশ্য সকালে পেট খালি না রাখা। সারা রাত উপোসের পর পেট খালি রাখা যাবে না। একটু স্মরণ করে দেখুন, মা-ঠাকুরমা কিংবা দাদিরা বলতেন, খালিমুখে ঘর থেকে বেরোবে না।
আজকাল অনেকে খান খালি পেটে পানি, কেউ লেবুজল, কেউ মেথি ভেজানো পানি। সকাল শুরু করতে কিছু না কিছু আমরা খাই-ই। সকালে পিৎজা, প্যাকেট করা খাবার বা প্যাকেটে ভরা ফলের রস খাওয়া ভালো নয়—এটা মনে রাখবেন। সকালে শর্করা কম খেয়ে প্রোটিন-জাতীয় খাবার খাওয়া ভালো। তাই খেতে পারেন লাল আটার রুটির সঙ্গে সবজি, ডিম, ফল, দুধ বা দই। কেক, মাফিন, পায়েস এসব নয়। খেতে পারেন স্প্রাউট সালাদ। অঙ্কুরিত ছোলা, সেদ্ধ ডিম আর সবজি দিয়ে এটি বানানো যায় সহজে। রুচি বদলাতে পেঁয়াজ, ক্যাপসিকাম আর ডিম দিয়ে মসলা অমলেট খুব ভালো ও পুষ্টিকর।
সকালবেলার ভালো নাশতা হতে পারে পোহা। পোহা মানে চিড়া। চিড়ার সঙ্গে বিভিন্ন মসলা, চিনাবাদাম এবং সবজি মিশিয়ে পোহা বানানো যায়। চিড়ায় প্রচুর আঁশ আছে এবং এটিতে ক্যালরি কম থাকে। একঘেয়েমির নাশতা থেকে রুচি বদলাতে এটি খেতে পারেন মাঝেমধ্যে। এ ছাড়া খেতে পারেন ডিমের পোঁচ, আটার রুটি আর ঘরে বানানো ফলের রস। দুধের সঙ্গে আটার রুটি আর কলা ফালি ফালি করে কেটেও একটা সুন্দর নাশতা খাওয়া যায় সকালবেলা।
আমি নাশতা করি আটার রুটি, ডিম সেদ্ধ আর ভাজি মিক্সড ভেজ দিয়ে। এরপর লাল চা। আমার খুব পছন্দ তিন কোনা পরোটা। তার সঙ্গে সাদা আলুর তরকারি পাঁচফোড়ন দিয়ে দারুণ। কিন্তু খাই কালেভদ্রে। মটরশুঁটির কচুরিও নাশতা হিসেবে দারুণ। অনেকে পান্তা ভাতের সঙ্গে খান ডিম, সকালবেলা। দুধ, চিড়া, কলা, দুধ, মুড়িও নাশতা হিসেবে ভালো। এর সঙ্গে একটুখানি মুড়কিও মেশানো যায়। আর দুধের বদলে দই। একটুখানি ঝোলাগুড়। উত্তরবঙ্গে এটি জলপান নামে পরিচিত। নাশতায় অনেকের থাকে শুধু মুড়ি। সঙ্গে মৌসুমি ফল, যেমন আম বা কাঁঠাল। চিড়ার সঙ্গেও আম-কাঁঠাল খাওয়া যায়। সেটা খেতেও দারুণ।
এখন সবার জন্য সহজে ভালো নাশতা আটার রুটি, সবজি বা ভাজি, ফল আর ডিম সেদ্ধ। পরে দই বা দুধ।
লেখক: সাবেক অধ্যক্ষ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ