মুহাম্মদ (সা.)। এই নামটি পৃথিবীর ইতিহাসে এক অনন্য নাম। তাঁর জীবন, আদর্শ আর কর্ম নিয়ে যত আলোচনা, গবেষণা বা বই লেখা হয়েছে, অন্য কোনো মানুষের ক্ষেত্রে তা হয়নি। কিন্তু তাঁর প্রকৃত পরিচয় ও মর্যাদা বুঝতে হলে আমাদের ফিরতে হবে তাঁরই ওপর অবতীর্ণ হওয়া মহাগ্রন্থ আল-কোরআনের কাছে। কোরআন মজিদ নিজেই তাঁর পরিচয় তুলে ধরেছে এক অসাধারণ আঙ্গিকে—
১. তিনি আল্লাহর প্রেরিত রাসুল: কোরআনে তাঁর যে পরিচয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরা হয়েছে, তা হলো তিনি আল্লাহর একজন প্রেরিত রাসুল বা বার্তাবাহক। হুদাইবিয়ার সন্ধির সময় যখন কাফেররা ‘মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ’ লিখতে আপত্তি জানায়, তখন আল্লাহ সুরা ফাতহের শেষ আয়াতে বলেন, ‘মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসুল।’ (সুরা ফাতহ: ২৯)
২. কিয়ামত পর্যন্ত সবার নবী: কোরআন দ্ব্যর্থহীন ভাষায় ঘোষণা করেছে যে তিনি কেবল নির্দিষ্ট কোনো জাতি বা সময়ের জন্য নন, বরং কিয়ামত পর্যন্ত সব জিন ও মানুষের জন্য প্রেরিত। আল্লাহ সুরা আম্বিয়ায় বলেন, ‘আমি আপনাকে পাঠিয়েছি সমগ্র জগতের জন্য রহমতস্বরূপ।’ (সুরা আম্বিয়া: ১০৭)
৩. সর্বশেষ নবী: কোরআনে মহানবী (সা.)-কে ‘খাতামুন নাবিইয়িন’ বা সর্বশেষ নবী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। ‘মুহাম্মাদ তোমাদের মধ্যকার কোনো পুরুষের পিতা নন, কিন্তু তিনি আল্লাহর রাসুল এবং নবীদের মধ্যে সর্বশেষ।’ (সুরা আহজাব: ৪০)। তাঁর পর আর কোনো নবীর আগমন ঘটবে না।
৪. শিক্ষক ও পরিশুদ্ধকারী: রাসুল (সা.) তাঁর শিক্ষা দিয়ে অশিক্ষিত ও বর্বর জাতিকে আমূল বদলে দিয়েছিলেন। কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘তিনিই উম্মিদের (নিরক্ষর) মধ্যে তাদেরই একজনকে রাসুল করে পাঠিয়েছেন, যে তাদের সামনে তাঁর আয়াতগুলো তিলাওয়াত করবে, তাদের পরিশুদ্ধ করবে এবং তাদের কিতাব ও হিকমতের শিক্ষা দেবে।’ (সুরা জুমুআ: ২)
৫. আলোকিত এক বাতি: রাসুল (সা.) ছিলেন মানবজাতির জন্য এক আলোকবর্তিকা। ‘হে নবী, আমি তো আপনাকে পাঠিয়েছি সাক্ষ্যদাতা, সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারী রূপে এবং আল্লাহর নির্দেশে মানুষকে আল্লাহর
দিকে আহ্বানকারী ও আলো বিস্তারকারী প্রদীপরূপে।’ (সুরা আহজাব: ৪৫)