হোম > ইসলাম

ইসলামের ইতিহাসে প্রথম হিজরত

কাউসার লাবীব

ছবি: সংগৃহীত

মহানবী (সা.) ৪০ বছর বয়সে আল্লাহর পক্ষ থেকে নবুওয়াতপ্রাপ্ত হোন। এরপর আল্লাহর নির্দেশে তিনি ইসলামের দাওয়াত মানুষের কাছে পৌঁছাতে থাকেন। তাঁর দাওয়াতে বিবেক সম্পন্ন মানুষজন সত্যপথ চিনতে পারে। ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় নিতে শুরু করে।

নবী করিম (সা.)-এর আহ্বানে মানুষের সঠিক পথে আসার বিষয়টি মক্কার কাফেররা ভালোভাবে নিতে পারেনি। তারা বুঝতে পারে—মানুষ যদি মূর্তিপূজার অসারতা জেনে ফেলে এবং সঠিক পথ চিনে ফেলে, তাহলে তো এই কাফেরদের নেতৃত্ব বিপদের মুখে পড়বে। তখন তারা ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় নেওয়া মানুষদের অত্যাচার শুরু করে।

আর এই অত্যাচারী কাফেররা সমাজের নেতৃস্থানীয় হওয়ায় তাদের কেউ কিছু বলার সাহসও করতে পারে না। তাদের এই নির্যাতনে মুসলমানদের কেউ প্রাণ হারায়, কেউ চিরতরে পঙ্গু হয়, কেউ হয় অমানবিক নিপীড়নের শিকার। এই অত্যাচার থেকে নবী করিম (সা.)-ও রেহাই পাননি। নানাভাবে তাঁকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হতো।

যখন মুসলমানদের ওপর নির্যাতন চরমে পৌঁছায় এবং তারা দিশেহারা হয়ে পড়ে, তখন নবীজি (সা.) মুসলমানদের নির্দেশ দেন হিজরত করে হাবশায় চলে যেতে। ফলে মক্কার কাফেরদের নিপীড়ন থেকে রক্ষা পেতে এবং মুক্তভাবে আল্লাহর ইবাদতের সুযোগ পেতে একদল মুসলমান হাবশার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। এটাই ছিল ইসলামের ইতিহাসে প্রথম হিজরত।

হাবশাকে হিজরতের জন্য বেছে নেওয়ার মধ্যে ছিল নবী (সা.)-এর চমৎকার রাজনৈতিক ও ভৌগোলিক জ্ঞান। কারণ, হাবশা ছিল এমন এক জায়গা যেখানে মুসলমানরা নিরাপদে থাকতে পারবে। মক্কার কুরাইশদের সঙ্গে আরবের বেশির ভাগ গোত্রের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল, ফলে তারা মুসলমানদের আশ্রয় দিত না।

ইয়েমেন তখন ছিল অস্থির—পারস্য ও রোমের দ্বন্দ্বে জর্জরিত, আর ধর্মীয়ভাবে ইহুদি ও খ্রিষ্টানদের দ্বন্দ্বে ছিন্নভিন্ন। এমনকি ইয়াসরিবেও (বর্তমান মদিনা) তখন ছিল অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে ভরপুর। তবে হাবশায় এমন এক বাদশাহ ছিলেন—যার কাছে কেউ জুলুমের শিকার হতো না। তিনি শান্তিকামীদের সহযোগী ছিলেন।

হাবশা যদিও মুসলমানদের জন্য নিরাপদ ছিল, কিন্তু ইসলামের প্রচার-প্রসারের জন্য তা উপযুক্ত ছিল না। হাবশার ভাষা, সংস্কৃতি ও ধর্মীয় পরিবেশ ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। স্থানীয় পরিবেশ ইসলামি আইন ও সমাজব্যবস্থা চালুর জন্য সহায়ক ছিল না। তাই নবী (সা.) হাবশায় নিজে হিজরত করেননি। তিনি মক্কায় থেকেই বিভিন্ন আরব গোত্রের কাছে দাওয়াত পৌঁছাতে থাকেন।

এক সময় মদিনার কয়েকজন হজে এসে নবীজি (সা.)-এর সাক্ষাৎ পান। তাঁর কথা শুনে ইসলাম গ্রহণ করেন। তাদের মাধ্যমে পরবর্তীতে মদিনায় মুসলমানদের সংখ্যা বাড়তে থাকে। তারা নবীজি (সা.)-কে আমন্ত্রণ জানান মদিনায় হিজরত করে চলে যেতে।

নবীজি (সা.) বুঝলেন, মক্কায় থেকে ইসলাম প্রচার এবং ইসলামি শাসন কায়েম অনেকটাই অসম্ভব। তাই আল্লাহর হুকুমে হিজরত করেন মদিনায়। সেখানে কায়েম করেন সত্যের শাসন। দূর করেন সমাজের অন্ধকার। ইসলামের আলোতে আলোকিত করেন চারদিক।

সন্তান আল্লাহর রহমতের স্নেহমাখা উপহার

আজকের নামাজের সময়সূচি: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫

জমাদিউস সানির দ্বিতীয় জুমা: মুমিনের করণীয়

মসজিদগুলো হয়ে উঠুক শিশুবান্ধব

ফুটপাতে পথশিশুদের হিমশীতল রাত

ফরজ গোসলের সময় নারীদের চুল ধোয়ার বিধান

শায়খ শরফুদ্দিন আবু তাওয়ামার হারিয়ে যাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়

আজকের নামাজের সময়সূচি: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫

দাওয়াতুল হকের মারকাজি ইজতেমা শনিবার

একের পর এক ভূমিকম্প মুমিনকে যে সতর্কবার্তা দিয়ে যাচ্ছে