প্রিয় নবীর প্রিয়তম সুন্নতের নাম মেসওয়াক। এটি এমন গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত যে, স্বয়ং রাসুলুল্লাহ (সা.) তা ফরজ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করতেন।
হজরত ওয়াসিলা ইবনে আসকা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আমাকে মেসওয়াকের আদেশ করা হয়েছে। আমার আশঙ্কা হতে লাগল, না জানি তা আমার ওপর ফরজ করে দেওয়া হয়।’ (মুসনাদে আহমাদ: ১৬০০৭)
মেসওয়াক আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জনের অন্যতম মাধ্যম। হজরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘মেসওয়াক মুখের পবিত্রতা এবং আল্লাহর সন্তুষ্টির মাধ্যম।’ (সুনানে নাসায়ি: ০৫)
মুমিন জীবনের সবচেয়ে বড় চাওয়া এবং সফলতা হলো আল্লাহর সন্তুষ্টি। মেসওয়াকের মাধ্যমে সেই সন্তুষ্টি অর্জিত হয় বলে হাদিস থেকে প্রতীয়মান হয়।
অজুর পূর্বে মেসওয়াক করে সেই অজু দিয়ে নামাজ আদায় করা এবং মেসওয়াক বিহীন অজু দ্বারা নামাজ আদায় করার মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘মেসওয়াক করে এক নামাজ মেসওয়াক বিহীন সত্তর নামাজ থেকেও উত্তম।’ (মুসনাদে আহমদ: ২৬৩৪০)
মেসওয়াক ও আধুনিক বিজ্ঞান
গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষ যা খায় তার ময়লা কুলি করার দ্বারা পরিপূর্ণ পরিষ্কার হয় না। সাধারণত মানুষের দাঁত নষ্ট হয় শয়নকালে। দিনের বেলায় মানুষ কখনো কথা বলে, কখনো পানাহার করে। তাই এ সময় মুখের গতিশীলতার কারণে রক্তরস বা রক্ত লসিকা তার কাজ করার সুযোগ পায় না।
রাতের বেলায় যখন মুখ বন্ধ হয়ে যায়, তখন সুযোগ আসে তার কাজ করার। এ কারণেই দাঁত রাতের বেলায় অধিক খারাপ হয়। ঘুমানোর পূর্বে তাই দাঁত পরিষ্কার করা উচিত। সাড়ে চৌদ্দশত বছর পূর্বেই ঘুমানোর পূর্বে মেসওয়াকের মাধ্যমে দাঁত পরিষ্কার করে নেওয়ার নির্দেশনা প্রদান করেছে ইসলাম। যার উপকারিতা এখন বৈজ্ঞানিকভাবেও প্রমাণিত।
লেখক: মুহাদ্দিস, জামিয়া আরাবিয়া দারুস সুন্নাহ রাজাবাড়ী, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা।