হোম > ইসলাম

জিলকদ: হজ ও কোরবানির প্রস্তুতির মাস

তাসলিমা জাহান

ছবি: সংগৃহীত

আরবি বর্ষপঞ্জির ১১তম মাস ‘জিলকদ।’ ইসলামের পূর্বে জাহিলিয়ার যুগে আরবের লোকজন এ মাসে যুদ্ধবিগ্রহ হারাম মনে করত। কেউ কাউকে হত্যা করত না, প্রতিশোধও নিত না। যেহেতু তারা এই মাসে হত্যা বা প্রতিশোধ নেওয়া থেকে বিরত ও বসে থাকত, তাই এ মাসের নাম দেওয়া হয় ‘জুলকদাহ’ বা জিলকদ, অর্থাৎ বসে থাকার মাস।

এই মাস অত্যন্ত গুরুত্ব ও তাৎপর্যপূর্ণ। চার পবিত্র মাসের মধ্যে এটি অন্যতম। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর কাছে আল্লাহর কিতাবে (অর্থাৎ লাওহে মাহফুজে) মাসের সংখ্যা ১২। সেই দিন থেকে, যেদিন আল্লাহ আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছিলেন। এর মধ্যে চারটি মাস মর্যাদাপূর্ণ।’ (সুরা তওবা: ৩৬)

‘জিলকদ’ হজের প্রস্তুতির দ্বিতীয় মাস। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘হজের নির্দিষ্ট কয়েকটি মাস রয়েছে।’ (সুরা বাকারা: ১৯৭)। ইসলামবিষয়ক গবেষকদের মতে, হজের তিনটি মাস আছে, এর মধ্যে প্রথমটি হলো শাওয়াল, দ্বিতীয়টি হলো জিলকদ এবং তৃতীয়টি হলো জিলহজের প্রথম ১০ দিন। (ফাতহুল বারি: ৩/৪২০)

এটি হজ ও কোরবানির প্রস্তুতির মাস। যাঁরা হজে যাওয়ার নিয়ত করেছেন, তাঁদের জন্য ‘জিলকদ’ প্রস্তুতির চূড়ান্ত সময়। সফরের প্রস্তুতি, মানসিক ও শারীরিক প্রস্তুতি, ইহরামের নিয়ম, হজের আহকাম ও মাসআলা জানা—সবকিছুর শুরু হয় এই মাসে। এই সময় আত্মশুদ্ধি ও তওবার মাধ্যমে নিজেকে আল্লাহর ঘরের সফরের উপযুক্ত করে তোলা জরুরি।

যাঁরা হজে যাচ্ছেন না, তাঁদের জন্য জিলকদ কোরবানির পরিকল্পনা ও প্রস্তুতির মাস। রাসুলুল্লাহ (সা.) কোরবানিকে ইবরাহিমি ত্যাগের স্মৃতি হিসেবে জোর দিয়েছেন। এই মাসেই কোরবানির পূর্বপ্রস্তুতি গ্রহণ, কোরবানিসংক্রান্ত মাসআলা জানা, কোরবানির পশুর বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহের পাশাপাশি আল্লাহর রাস্তায় ত্যাগ স্বীকারের জন্য অন্তর প্রস্তুত করা উচিত।

আইয়ামে বিজের রোজা, প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবারের রোজাসহ বেশি বেশি নফল রোজা রাখা যেতে পারে এ মাসে। কেননা জিলকদ মাসে নফল রোজা রাখা একটি ফজিলতপূর্ণ আমল। (সুনানে আবু দাউদ: ২৪২৮)

ইবাদত, দোয়া ও ইস্তিগফারের মাধ্যমে আত্মাকে গঠনের মাস জিলকদ। কোরআন তিলাওয়াত, নফল নামাজ, দান-সদকা এই মাসে বাড়িয়ে দেওয়া ইমানি প্রস্তুতিকে শক্তিশালী করে। ইমাম জাসসাস (রহ.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি এই বরকতময় মাসগুলোতে (মহররম, রজব, জিলকদ, জিলহজ) ইবাদত করে, অন্যান্য মাসেও তার ইবাদত করার তৌফিক হয়। আর যে এই মাসগুলোতে পাপ থেকে বাঁচার চেষ্টা করে, বছরের বাকি মাসে পাপ থেকে বেঁচে থাকা তার জন্য সহজ হয়। (আহকামুল কোরআন: ৪/৩০৮)

হজ হোক বা কোরবানি; উভয় ইবাদতের মূলেই আছে ত্যাগ, আনুগত্য ও আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্য। আল্লাহ তাআলা আমাদের সেই লক্ষ্যে পৌঁছার তৌফিক দিক।

নির্বাচনের কারণে এগিয়ে এল কওমি মাদ্রাসার কেন্দ্রীয় পরীক্ষা

শুরু হচ্ছে পুষ্টি ভার্সেস অব লাইট সিজন-২ কোরআন প্রতিযোগিতা

প্রবীণ সুফি পীর জুলফিকার আহমদ নকশবন্দি আর নেই

অপমৃত্যু থেকে রক্ষা করে যে আমল

আজকের নামাজের সময়সূচি: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫

যেভাবে অন্যদের ভুল শুধরে দিতেন নবীজি

আজকের নামাজের সময়সূচি: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫

মিসরে কোরআন প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হাফেজ আনাসকে বিমানবন্দরে সংবর্ধনা

জুমার নামাজ ছেড়ে দেওয়ার ভয়াবহ পরিণতি

আজকের নামাজের সময়সূচি: ১২ ডিসেম্বর ২০২৫