একটা সমাজে বহু শ্রেণি-পেশার মানুষ বসবাস করে। আর্থিক বিবেচনায় মানুষ তিন ধরনের। ধনী, মধ্যবিত্ত আর গরিব। মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ সুখ-সাচ্ছন্দ্য ও অভাব-অনটন উভয়ের মধ্য দিয়ে দিনাতিপাত করে। ধনী থাকে ভোগবিলাসে। যারা দরিদ্র, তারা ধনীদের দ্বারস্থ হয়। পেটের দায়ে হাত পাতে। ভিক্ষাবৃত্তি করে বেড়ায়।
আসলে ভিক্ষাবৃত্তি কোনো সম্মানজনক পেশা নয়। পরিস্থিতির শিকার হয়ে অনেকে এই পথে নামে। তাই কখনো কোনো অসহায় দরিদ্র দুমুঠো ভাত খেতে চাইলে কিংবা আর্থিক সাহায্যের আবেদন করলে তা প্রত্যাখ্যান করা অনুচিত; যদি সামর্থ্য থাকে। অনেকে ভিক্ষুককে ধমক ও অপমান করে সাহায্যের পরিবর্তে। অথচ স্বয়ং আল্লাহ তাআলা ভিক্ষুককে ধমক দিতে নিষেধ করেছেন।
এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘এবং যে সাহায্যপ্রার্থী, তাকে ধমকাবেন না।’ (সুরা দোহা: ১০)
ক্ষুধার্তকে অন্নদান ইসলামে অতি উত্তম একটি কাজ। সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যারা অনাথ, দরিদ্র মিসকিনকে খালি হাতে ফিরিয়ে দেয়, দুমুঠো ভাত খেতে দেয় না, হেয় প্রতিপন্ন করে। তারা যেন আল্লাহর নিয়ামতের অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। তাদের জন্যই প্রস্তুত রয়েছে ভয়ানক জাহান্নাম।
হাশরের মাঠে বিচারকার্য শেষে জান্নাতিরা পরস্পরে অথবা ফেরেশতাদের অপরাধীদের সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবে, ওরা কোথায়? যখন জানতে পারবে তারা জাহান্নামে, তখন তাদের দিকে তাকিয়ে বলবে, কোন জিনিস তোমাদের জাহান্নামে নিয়ে গেল? তখন তাদের উত্তর হবে এমন—আমরা নামাজ পড়তাম না। অভাবীদের খাবার খাওয়াতাম না। (সুরা মুদ্দাসির: ৪৪)
তাই যারা আর্থিকভাবে সচ্ছল, তাদের উচিত গরিব মিসকিনদের সহযোগিতা করা। অন্যথায় উপরোক্ত আয়াতে বর্ণিত শাস্তি তার জন্য অপেক্ষমাণ।