সুসান্নিধ্য এবং সৎ সাহচর্যের প্রভাব অনেক। এর মাধ্যমে সহজেই মানুষের ভেতর পরিবর্তন আসে। সুসান্নিধ্য গ্রহণ তাই অতীব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। এর গুরুত্ব বোঝাতে গিয়ে মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বলেছেন, ‘হে ইমানদারগণ, তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং সত্যবাদীদের সঙ্গে থাকো’ (সুরা তাওবা: ১১৯)
বিশিষ্ট তাফসিরকারক আল্লামা সুয়ুতি (রহ.) বলেন, ‘যারা ইমান ও আল্লাহর রাসুলের সঙ্গে কৃত আনুগত্যের অঙ্গীকারে সত্যবাদী তারা সত্যবাদী, অর্থাৎ যাদের সংস্রব গ্রহণের কথা বলা হয়েছে।’ (তাফসিরে জালালাইন)
আরেক আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আপনি নিজেকে তাদের সংসর্গে আবদ্ধ রাখুন, যাঁরা সকাল-সন্ধ্যায় নিজেদের রবকে ডাকে তাঁর সন্তুষ্টি হাসিলের জন্য।’ (সুরা কাহাফ: ২৮)
সৎ ও অসতের উপমা দিতে গিয়ে নবীজি (সা.) বলেন, ‘সৎ বন্ধু আর অসৎ বন্ধুর উপমা হলো—আতর বিক্রেতা ও কামারের হাঁপরের মতো। হয়তো আতর কিনবে অথবা আতরের সুঘ্রাণ পাবে। আর অপর দিকে কামারের হাঁপর তোমার বাড়ি-ঘর জ্বালিয়ে দেবে, তোমার কাপড় পুড়িয়ে দেবে। অথবা অন্তত এক প্রকার গন্ধ পাবে।’ (সহিহ্ বুখারি: ২১০১)
জীবন সঠিকভাবে চালানোর জন্য সৎ সঙ্গ খুবই দরকার। রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য অপর ভাইকে মহব্বত করবে, আল্লাহর জন্যই ঘৃণা করবে—এসব থেকে আল্লাহর জন্যই বিরত থাকবে, তাহলে সে ব্যক্তি তার ইমান পূর্ণ করে ফেলল।’ (সুনানে আবু দাউদ: ৪৬৮১)
সৎ ব্যক্তিদের সঙ্গে থাকা এবং তাঁদের ভালোবাসার সুপরিণতি হলো পরকালেও তাঁদের সঙ্গে থাকার সৌভাগ্য হবে। হাদিসে এসেছে, এক সাহাবি নবী করিম (সা.)-কে জিজ্ঞেস করে, ‘হে আল্লাহর রাসুল, আপনি সেই ব্যক্তি সম্পর্কে কী বলেন, যে একটি গোষ্ঠীকে ভালোবাসে অথচ তাদের সমান নেক আমল করতে পারেনি!’ রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে যাকে ভালোবাসে তার হাশর হবে তারই সঙ্গে।’ (সহিহ্ বুখারি: ৫৮১৮)