মানুষ সামাজিক জীব। সমাজবিহীন মানুষের বেঁচে থাকা প্রায় অসম্ভব। আর বেঁচে থাকার সুবাদেই অনেক সময় ধার বা ঋণের প্রয়োজন দেখা দেয়। তখন এ ছাড়া ভিন্ন কোনো উপায় থাকে না। ফলে আমরা ঋণ গ্রহণ করে থাকি।
ঋণ গ্রহণে নিরুৎসাহ
নবী করিম (সা.) ঋণ করতে নিরুৎসাহিত করেছেন। হজরত ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘গুনাহ কম করো, তাহলে মৃত্যু তোমার ওপর সহজ হবে। ঋণ কম করো, তাহলে স্বাধীনভাবে জীবন যাপন করতে পারবে।’ (কানজুল উম্মাল: ৪৩৭৬৯)
আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ঋণ ছাড়া শহীদের সকল গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।’ (সহিহ্ মুসলিম: ৪৭৩০)
পরিশোধের নিয়তে ঋণ গ্রহণ
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি মানুষের সম্পদ ধার নেয় পরিশোধ করার উদ্দেশ্যে, আল্লাহ তাআলা তা আদায়ের ব্যবস্থা করে দেন। আর যে তা নেয় বিনষ্ট করার নিয়তে আল্লাহ তাআলা তাকে ধ্বংস করেন। (সহিহ্ বুখারি: ২২২৯)
ঋণ আদায়ের দোয়া
হজরত আলী (রা.) থেকে বর্ণিত, জনৈক মুকাতিব (বিনিময় মূল্যের ভিত্তিতে মালিকের সঙ্গে আজাদির চুক্তি করা) গোলাম তাঁর কাছে এসে বলল, ‘আমি আমার চুক্তি অনুসারে বিনিময় মূল্য দিতে অপারগ হয়ে পড়েছি। আপনি আমাকে কিছু সাহায্য করুন।’
তিনি বললেন, ‘তোমাকে এমন কিছু কালিমা আমি শিখিয়ে দেব কি; যেগুলো রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে শিখিয়েছিলেন? তোমার জিম্মায় যদি ছবির পাহাড় (তায় গোত্রে অবস্থিত আরবের একটি বড় পাহাড়) পরিমাণ ঋণও থাকে, তবে এতে আল্লাহ তাআলা তাও আদায় করে দেবেন। তুমি বলবে—আল্লাহুম্মাকফিনি বিহালালিকা আন হারামিক, ওয়া আগনিনি বিফাদলিকা আম্মান সিওয়াক।’
অর্থাৎ ‘হে আল্লাহ, হারাম থেকে মুক্ত রেখে তোমার প্রদত্ত হালাল বস্তুই আমার জন্য যথেষ্ট করে দাও। তোমার অনুগ্রহে তুমি ছাড়া সব কিছু থেকে আমাকে অমুখাপেক্ষী বানিয়ে দাও।’ (জামে তিরমিজি: ৩৫৬৩)
লেখক: উবাইদুল্লাহ নাঈম সিরাজী
শিক্ষক ও অনুবাদক