দুটি জিনিসের কারণে মানুষ আল্লাহবিমুখ হয়। ভুলে যায় তার স্রষ্টাকে এবং তাঁর দেওয়া দৈনন্দিন পালনীয় আদেশ-নিষেধ। এক. ধনসম্পদের আধিক্য ও প্রাচুর্য। দুই. নিজ সন্তান। মূলত এ দুটি জিনিসই মানুষের জন্য পরীক্ষার বস্তু। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন, ‘তোমাদের ধনসম্পদ ও সন্তানসন্ততি তো পরীক্ষার বস্তু। আর আল্লাহরই নিকট রয়েছে মহা পুরস্কার।’ (সুরা তাগাবুন: ১৫)
ধনসম্পদ এবং সন্তানসন্ততি নিঃসন্দেহে আল্লাহপ্রদত্ত নিয়ামত। কিন্তু যদি এ নিয়ামত মানুষকে আল্লাহর স্মরণ থেকে গাফেল রাখে, আল্লাহর নির্দেশিত বিধিমালা পালনে বিঘ্ন ঘটায়, তাহলে সেটা নিয়ামত নয় বরং তার ক্ষতি ও পরকাল ধ্বংসের মাধ্যমমাত্র। এখন প্রশ্ন জাগে, নিয়ামত আবার পরকাল ধ্বংসের মাধ্যম হয় কীভাবে?
প্রথমত, ধনসম্পদ উপার্জনের পেছনে এমনভাবে লেগে যাওয়া—দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ যথাসময়ে ধীরস্থিরভাবে আদায়েরও সময় মেলে না। নফল ইবাদত; যেমন মাসনুন দোয়া, তাসবিহ-তাহলিল, কিংবা কোরআন তিলাওয়াত তো দূরের কথা!
দ্বিতীয়ত, সন্তানকে সুশিক্ষা দেওয়া পিতামাতার কর্তব্য। তবে তাদের পড়াশোনা, পোশাক-পরিচ্ছদ আর খানাপিনার নানা শখ-আহ্লাদ পূরণ করতে গিয়ে দ্বীন পালনে উদাসীনতা বা গাফিলতি কখনোই কাম্য নয়। বরং তা সব সময় অগ্রাহ্য ও বর্জনীয়। এ কথা স্মরণ করিয়ে দিতেই আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে ইমানদারগণ, তোমাদের সম্পদ এবং সন্তান যেন তোমাদের আল্লাহর স্মরণ থেকে বিরত না করে। যারা তা করে, তারা ক্ষতিগ্রস্ত।’ (সুরা মুনাফিকুন: ৯)
অর্থাৎ যারা সার্বক্ষণিক দুনিয়া অর্জনের চেষ্টায় রত। সন্তানের সঙ্গে খেলাধুলা আর তার সুন্দর ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে সদা পেরেশান। নিজের পরকালীন জীবন নিয়ে যাদের নেই বিন্দুমাত্র ভাবনা, তারাই তো প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত।