ইসলামি পঞ্জিকায় রবিউস সানি মাসটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে, মাসের প্রথম জুমা মুসলিমদের জন্য আল্লাহর রহমত, নেক আমল ও ক্ষমা লাভের এক সুবর্ণ সুযোগ। জুমা নিজেই সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন হিসেবে ইসলামে বিশেষ মর্যাদা রাখে। এ দিনে আল্লাহর নৈকট্য লাভ, গুনাহ মাফ এবং নেক কাজের প্রতিশ্রুতি অনেক বেশি।
পবিত্র কোরআনে জুমার দিনে আল্লাহর ইবাদতে মনোযোগী হওয়ার সুস্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে, ‘হে মুমিনগণ, যখন জুমার দিন (নামাজের জন্য) আহ্বান করা হয়, তখন তোমরা ব্যবসা-বাণিজ্য পরিত্যাগ করো এবং আল্লাহর নাম স্মরণে মগ্ন হও।’ (সুরা জুমুআ: ৯)
রাসুলুল্লাহ (সা.) জুমার দিনের গুরুত্ব সম্পর্কে বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত খোদার প্রতি মনোযোগী হয় এবং দোয়া ও নেক কাজ করে, আল্লাহ তাকে ক্ষমা করবেন।’ (সহিহ্ মুসলিম: ৮৯৮)
জুমার বিশেষ আমল
জুমা উপলক্ষে এ দিনে আমাদের কিছু বিশেষ আমলের প্রতি মনোযোগী হওয়া উচিত:
১. সালাতুল জুমা ও পবিত্রতা: সময়মতো মসজিদে পৌঁছে জুমার নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায় করা এবং খুতবা মনোযোগে শোনা। এর আগে গোসল করা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হওয়া ও সুগন্ধি ব্যবহার করা সুন্নত। (সহিহ্ বুখারি: ৮৮১ ও ৮৭৬)
২. দোয়া ও কোরআন পাঠ: বেশি বেশি দরুদে ইবরাহিম ও কোরআন পাঠ করা। জুমার দিনে আন্তরিকভাবে আল্লাহর নিকট গুনাহ ক্ষমা, সুস্থতা ও ইমানের দৃঢ়তার জন্য দোয়া করা।
৩. দান ও সদকা: দরিদ্র ও অসহায়দের সাহায্য করা, কেননা ‘সদকা পাপ মুছে দেয়—যেমন পানি আগুন নিভিয়ে দেয়’। (সহিহ্ মুসলিম: ১০৪০)
৪. নফল ইবাদত ও তাসবিহ: জুমার আগে বা পরে নফল নামাজ পড়া এবং দরুদ ও তাসবিহ (যেমন সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকবার) পাঠ করা আত্মার প্রশান্তি এনে দেয়।
৫. আন্তরিকতা ও মনোযোগ: নামাজ, দোয়া ও খুতবার সময় মনের পুরো মনোযোগ দেওয়া। ছোট নেক কাজও আল্লাহর কাছে বড় পুরস্কার এনে দেয়।
এই বিশেষ দিনে আমাদের সচেতন প্রচেষ্টা ও আন্তরিক ইবাদত আল্লাহর কাছ থেকে অসীম বরকত ও নেক আমলের ধারাকে স্থায়ী করবে। এটি কেবল একটি দিন নয়, বরং আত্মিক উন্নয়নের এক গুরুত্বপূর্ণ ধাপে পরিণত হওয়ার সুযোগ।