স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক মানবজীবনের অন্যতম পবিত্র ও মধুর বন্ধন। এটি নিছক আক্দ নয়, বরং ভালোবাসা, সহানুভূতি, দায়িত্ববোধ ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তিতে গড়ে ওঠা সম্পর্ক। একটি আদর্শ দাম্পত্য জীবনের ভিত্তি তৈরি হয় পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং একে অপরকে বুঝে নেওয়ার মানসিকতার মাধ্যমে। স্বামী যেন স্ত্রীর শ্রেষ্ঠ আশ্রয় হয়, আর স্ত্রী যেন স্বামীর প্রশান্তির উৎস হয়; এটাই ইসলামের শিক্ষা।
সংসার জীবনে স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক সুসম্পর্ক ও ভালোবাসার মর্যাদা ব্যাপক। দাম্পত্য জীবনে উত্তম আচার-আচরণে রয়েছে সওয়াব, কল্যাণ ও ভালোবাসার হাতছানি। আমাদের নবী করিম (সা.) স্ত্রীদের সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলতেন, বিভিন্ন কাজে তাঁদের সহযোগিতা করতেন, সুন্দর নামে ডাকতেন, প্রশংসা করতেন, খেলাধুলা করতেন, একসঙ্গে খেতেন, এক পেয়ালায় পান করতেন, কোলে মাথা রেখে শুয়ে থাকতেন, চুল আঁচড়ে দিতেন; যা আমাদের জন্য উত্তম আদর্শ।
দাম্পত্য জীবনে স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক খরচ বহন এবং একে অপরের মুখে খাবার তুলে দেওয়ায় রয়েছে সদকার সওয়াব পাওয়ার সুযোগ। আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘শ্রেষ্ঠ সদকা হলো, একজন মানুষ তার স্ত্রীর মুখে এক লোকমা খাবার তুলে দেবে।’ (সহিহ্ বুখারি)। তিনি আরও বলেন, ‘মানুষের সর্বোত্তম মুদ্রা সেটি, যা সে তার পরিবারের খরচে ব্যয় করে।’ (সহিহ্ মুসলিম)
হজরত সাদ (রা.)-কে একবার নবী করিম (সা.) বলেন, পরিবারের জন্য যা তুমি খরচ করবে, তা তোমার জন্য সদকা হবে। এমনকি যে লোকমাটি তুমি তোমার স্ত্রীর মুখে তুলে দেবে সেটিও। (সহিহ্ বুখারি)
ছোটখাটো ভুল বা ত্রুটি ক্ষমা করে, একে অপরের পাশে দাঁড়ানোই এই সম্পর্কের সৌন্দর্য। সুখী দাম্পত্য জীবনের চাবিকাঠি হলো আত্মিক সংযোগ, আল্লাহভীতি এবং পারস্পরিক ভালোবাসা। এই বন্ধন যতটা হৃদয়ের, ততটা দায়িত্বেরও। তাই এই সম্পর্কের যত্ন নেওয়া, তা ধরে রাখা এবং আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য একসঙ্গে পথচলা প্রত্যেক মুসলিম দম্পতির লক্ষ্য হওয়া উচিত।