হোম > বিশ্ব > যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা

ট্রাম্প কেন পুতিনের পক্ষে—ব্যাখ্যা দিলেন স্টিভ ব্যানন

ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত স্টিভ ব্যানন। ছবি: এএফপি

ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের রাশিয়ার প্রতি সহানুভূতি একটি কৌশলগত একটি পদক্ষেপ হতে পারে। এই বিষয়ে যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক ইনডিপেনডেন্টের এক নিবন্ধে স্টিভ ব্যাননের সাম্প্রতিক একটি সাক্ষাৎকারের প্রসঙ্গ টেনেছেন লেখক মাইকেল শেরিডান।

ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত স্টিভ ব্যানন। একসময় তিনি ট্রাম্পের প্রধান কৌশলবিদ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর মতে, ট্রাম্প প্রশাসনের ইউক্রেনকে পরিত্যাগ করার মূল উদ্দেশ্য হলো—রাশিয়ার সঙ্গে সমঝোতা করে চীনের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া।

সম্প্রতি টিম ডিলনের একটি পডকাস্টে ব্যানন আরও জানান, চীনের কমিউনিস্ট পার্টি যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক যুদ্ধ চালাচ্ছে।

ব্যাননের ভাষ্যমতে, মার্কিন অভিজাত শ্রেণি চীনের হাতে অর্থনৈতিক কর্তৃত্ব তুলে দিয়েছে, যা এখন ‘ডিকাপলিং’ বা সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন করা ছাড়া রোধ করা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, ‘চীনারা যুদ্ধে যেতে চায় না। কারণ তারা জানে, আমরা চাইলে সব ধ্বংস করে দিতে পারি এবং মানুষ মেরে ফেলতে পারি।’

ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদের সময় ব্যানন যুক্তি দিয়েছিলেন—রাশিয়া পশ্চিমা সভ্যতার ধর্মীয় ও দার্শনিক ঐতিহ্যের সঙ্গে অনেকাংশে সংযুক্ত। ২০১৮ সালে তিনি পুতিনের ঘনিষ্ঠ দার্শনিক আলেকসান্দর দুগিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন। এই সাক্ষাৎকে পশ্চিমা ও রুশ ঐতিহ্যের মধ্যে সংযোগ স্থাপনের প্রয়াস হিসেবে দেখা হয়েছিল।

কিছু বিশ্লেষক মনে করেন, ট্রাম্পের এই কৌশল মার্কিন অপর প্রেসিডেন্ট হেনরি কিসিঞ্জারের কৌশলের ঠিক উল্টো সংস্করণ হতে পারে। ১৯৭২ সালে কিসিঞ্জার ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের মধ্যে সম্পর্ক পুনরুদ্ধার করেছিলেন, যা পরে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনে সহায়ক হয়। বর্তমান কৌশলটি হলো রাশিয়াকে চীনের প্রভাব থেকে বিচ্ছিন্ন করে সি চিনপিংকে মোকাবিলা করা। ব্যাননের মতে, এটি চীনের শাসন ব্যবস্থারও পরিবর্তন ঘটাতে পারে।

তবে বাস্তবতা ভিন্ন। ১৯৭২ সালে কিসিঞ্জারের সময় চীন ও সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে দ্বন্দ্ব বিরাজ করছিল এবং চীন তখন অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল ছিল। কিন্তু বর্তমানে চীন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ, যা ১৯৭২ সালের পরিস্থিতি থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন।

চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বলেছেন, ‘আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি যেভাবেই বদলাক, চীন-রাশিয়া বন্ধুত্বের ঐতিহাসিক ভিত্তি অপরিবর্তিত থাকবে।’ এর মাধ্যমে বোঝানো হচ্ছে, পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার পরও তাদের রাশিয়াকে সমর্থন দেওয়া অব্যাহত থাকবে।

যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক ইনডিপেনডেন্টের এক নিবন্ধে লেখক মাইকেল শেরিডান উল্লেখ করেছেন, ২০২৩ সালে সি ও পুতিন তিনবার বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকগুলোতে তাঁরা যৌথ কৌশল নির্ধারণ করেছেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ৮০ তম বার্ষিকী উদ্‌যাপনে অংশগ্রহণ করতে সি এই বছরও মস্কো সফর করবেন। চীনের পররাষ্ট্রনীতির ভাষায় এটি ‘বিশ্বব্যাপী ফ্যাসিবাদ বিরোধী যুদ্ধ’ হিসেবে অভিহিত হচ্ছে, যা পুতিনের ইউক্রেন যুদ্ধের ভাষার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

ব্যাননও শেষ পর্যন্ত মত দিয়েছেন—ট্রাম্প প্রশাসন চীনের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে চায়। কিন্তু এটি সহজ হবে না চীন ও রাশিয়ার মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক এবং চীনের অর্থনৈতিক শক্তির কারণে। ট্রাম্পের কৌশল বাস্তবায়ন করতে গেলে তাই জটিলতা তৈরি হবে। পুতিন ও সি’র মধ্যকার মিত্রতা দৃঢ়, যা ট্রাম্পের পরিকল্পনাকে ব্যাহত করতে পারে।

মার্কিন নাগরিকদের অবিলম্বে ভেনেজুয়েলা ছাড়তে বলল স্টেট ডিপার্টমেন্ট

এইচ-১বি ভিসার ফি বাড়ানোর পর এবার যাচাই প্রক্রিয়াও কঠোর করল ট্রাম্প প্রশাসন

সোমালি অভিবাসীদের ‘আবর্জনা’ বললেন ট্রাম্প

আমি আগের তুলনায় এখন আরও বেশি প্রাণবন্ত—বলেই মন্ত্রিসভায় ঘুমিয়ে পড়লেন ট্রাম্প

বাইডেনের ‘অটোপেনে’ সই করা সব নথি বাতিল করছেন ট্রাম্প

গ্রিন কার্ড থেকে নাগরিকত্ব—১৯ দেশের অভিবাসীদের সব আবেদন থামিয়ে দিল যুক্তরাষ্ট্র

নিউইয়র্কে শ্রম আইন লঙ্ঘন: ৩ কোটি ৫০ লাখ ডলার জরিমানা দিচ্ছে স্টারবাকস

ট্রাম্পের এমআরআই পরীক্ষার রিপোর্টে যা আছে

‘শিগগির ক্ষমতা ছাড়’—মাদুরোকে ট্রাম্পের আলটিমেটাম

আমার মাথায় সমস্যা নেই, বিশ্বাস না হলে এমআরআই রিপোর্ট দেখাব—সাংবাদিকদের ট্রাম্প