হোম > বিশ্ব > মধ্যপ্রাচ্য

ইসরায়েলের প্রযুক্তিগত শ্রেষ্ঠত্ব থাকলেও দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধে এগিয়ে ইরান: বিশেষজ্ঞ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­

গত শুক্রবার ভোরে ইরানে হামলা চালায় ইসরায়েল। ছবি: এএফপি

কাতারের ইনস্টিটিউট ফর গ্র্যাজুয়েট স্টাডিজের সহকারী অধ্যাপক মুহানাদ সেলুম বলেছেন, ‘এই যুদ্ধে ইসরায়েলের প্রযুক্তিগত শ্রেষ্ঠত্ব থাকলেও ইরানের দীর্ঘ সময় যুদ্ধের ময়দানে টিকে থাকার সামর্থ্য রয়েছে।’

তিনি ব্যাখ্যা করেন, সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েল ইরানের আকাশসীমায় প্রায় পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছে। তবে ইরানি ভূখণ্ডের আয়তন ইসরায়েলের ৭০ গুণ।

আল জাজিরাকে সেলুম বলেন, ‘ (ইরানিরা) অনেক আঘাত সহ্য করতে পারে, কিন্তু তাদের নিজস্ব ধরনের অস্ত্রশস্ত্রও আছে, যা ইসরায়েলকে সত্যিই আঘাত করতে পারে। ইসরায়েলের এই যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করার সক্ষমতা নেই, তাই তাদের একটি নিষ্পত্তিমূলক বিজয় দরকার অথবা যত দ্রুত সম্ভব তাদের কৌশলগত লক্ষ্য অর্জন করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এই সংঘাতের একটি জটিল পর্যায়ে রয়েছি...কারণ, উভয় পক্ষ এখনো এটিকে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ হিসেবে ঘোষণা করেনি, কিন্তু উভয় পক্ষই তাদের অস্ত্রের গতি বাড়াচ্ছে।’

সেলুমের মতে, হামাসের নেতৃত্বে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের হামলায় এটি স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল, ইসরায়েলের বিমান প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ‘বিপর্যস্ত’ হতে পারে—এই কৌশল এখন ইরানিরা ব্যবহার করছে। তিনি উল্লেখ করেন, ইরান একসঙ্গে বিপুলসংখ্যক ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন নিক্ষেপ করে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে, যা ইসরায়েলের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। ইসরায়েলের আয়রন ডোমসহ অন্যান্য প্রতিরক্ষাব্যবস্থা অধিকাংশ হামলা প্রতিহত করলেও কিছু ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম হচ্ছে এবং ক্ষয়ক্ষতি ঘটাচ্ছে।

অধ্যাপক সেলুমের মতে, ‘যদি (যুদ্ধ) দীর্ঘায়িত হয়, তবে তা ইসরায়েলের স্বার্থের অনুকূল হবে না। ইসরায়েল এই যুদ্ধে বেশি দিন টিকতে পারবে না; কারণ, অধিকাংশ ইসরায়েলি বাংকারে (ভূগর্ভস্থ আশ্রয়কেন্দ্র) রয়েছে, তাদের অর্থনীতি প্রভাবিত হচ্ছে।’

ইসরায়েলের অর্থনীতি ইতিমধ্যে গাজায় চলমান সংঘাতের কারণে চাপে রয়েছে। ইরানের সঙ্গে একটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ তাদের অর্থনৈতিক চাপকে আরও বাড়িয়ে দেবে। প্রতিরক্ষা ব্যয় বৃদ্ধি, জনশক্তির অভাব এবং পর্যটন খাতের ক্ষতি ইসরায়েলের অর্থনীতিকে দুর্বল করে তুলছে।

অন্যদিকে, ইরাকের সঙ্গে যুদ্ধের পর বিগত অন্তত ৪০ বছর ধরে ইরান ‘জরুরি পরিস্থিতিতে’ রয়েছে। লেবানন ও সিরিয়ায় তাদের সক্রিয় মিলিশিয়া বাহিনী রয়েছে এবং তারা কঠোর নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও টিকে আছে। ইসরায়েলের অর্থনীতির তুলনায় ইরানের অর্থনীতি ভিন্ন প্রকৃতির। ইরানের অর্থনীতি, বিশেষ করে জ্বালানি তেল রপ্তানি এবং তার আঞ্চলিক প্রভাবের মাধ্যমে, নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও কিছু স্থিতিস্থাপকতা দেখিয়েছে।

সেলুম বলেন, ‘সুতরাং আমরা এমন দুটি দেশকে দেখছি, যারা একে অপরের থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন এবং একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াই করছে।’

এই পরিস্থিতি মধ্যপ্রাচ্যে একটি অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ তৈরি করেছে, যেখানে উভয় পক্ষই একে অপরের দুর্বলতা কাজে লাগিয়ে জয়ী হওয়ার চেষ্টা করছে।

গাজায় হামাসবিরোধী ইসরায়েলি প্রক্সি গোষ্ঠীর নেতা ইয়াসির আবু শাবাব নিহত, কে তিনি

গাজায় যুদ্ধবিরতি খুব ভালোভাবে চলছে, দ্বিতীয় ধাপ শুরু শিগগির: ট্রাম্প

মার্কিন মধ্যস্থতায় ৪০ বছরের মধ্যে প্রথমবার সরাসরি আলোচনায় লেবানন-ইসরায়েল

ফিলিস্তিনের নেলসন ম্যান্ডেলা: বারঘৌতির মুক্তির দাবিতে সোচ্চার দুই শতাধিক বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব

‘সর্বত্র ভূত দেখে’ যত্রতত্র ‘বোমা ফেলছেন বিবি’, লাগাম টানতে ব্যর্থ যুক্তরাষ্ট্র

ফিলিস্তিন রাষ্ট্রই একমাত্র সমাধান—পোপ

দুর্নীতির মামলায় প্রেসিডেন্টের কাছে নেতানিয়াহুর ক্ষমা প্রার্থনা

গাজার পুলিশ বাহিনী গঠনে হাজারো ফিলিস্তিনিকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে মিসর

যুদ্ধবিরতির মধ্যেও গাজায় ইসরায়েলি হামলা চলছে, নিহত ৭০ হাজার ছাড়াল

সংঘবদ্ধ নির্যাতন ‘কার্যত’ ইসরায়েলের রাষ্ট্রনীতি, কুকুর হামলা, যৌন নির্যাতনের চিত্র জাতিসংঘের প্রতিবেদনে