ইরানের ২২ বছর বয়সী তরুণী মাহসা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে নিজেদের চুল কাটতে এবং হিজাব পোড়াতে শুরু করেছেন ইরানের নারীরা। তাঁরা হিজাব খুলে ফেলছেন এবং আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিচ্ছেন। ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
গত ১৩ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবারে ‘ঠিকভাবে হিজাব না পরার কারণে’ আমিনিকে গ্রেপ্তার করেছিল ইরানের নৈতিকতা-বিষয়ক পুলিশ (মোরালিটি পুলিশ)। এরপর পুলিশি হেফাজতে শুক্রবারে তাঁর মৃত্যু হয়। মাহসা আমিনির বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি হিজাব দিয়ে তাঁর মাথার চুল পুরোপুরি ঢাকেননি।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, পুলিশ নির্যাতন করে মাহসাকে মেরে ফেলেছে বলে অভিযোগ তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই পোস্ট দিচ্ছেন। তবে পুলিশ এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, অন্য আটক নারীদের সঙ্গে অপেক্ষা করার সময় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন।
মাহসার মৃত্যুর পর বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে ইরানে। গত শনিবার তাঁর জানাজার সময়েও বিক্ষোভ করেছেন ইরানের সাধারণ মানুষ। বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করেছে।
রয়টার্স আরও বলেছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিক্ষোভের ভিডিও ও ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। ওই সব ভিডিওতে দেখা গেছে, বিক্ষোভকারীরা সরকারবিরোধী স্লোগান দিচ্ছেন। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ছুড়ছে।
ইরানের আইনে রয়েছে, সাত বছরের বেশি বয়সী নারীদের ধর্মীয় হেড স্কার্ফ (হিজাব) পরা বাধ্যতামূলক। এই আইনের প্রতিবাদে অনেক নারী এখন নিজেদের চুল কেটে ফেলছেন এবং হিজাব পুড়িয়ে ফেলছেন।
ইরানের সাংবাদিক ও অ্যাকটিভিস্ট মাসিহ আলিনেজাদ টুইটারে একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন। সেখানে তিনি বলেছেন, ‘সাত বছর বয়স থেকে আমরা যদি হিজাব না পরি, তাহলে আমরা স্কুলে যেতে পারব না, চাকরি করতে পারব না। আমরা এই সব লিঙ্গবৈষম্যমূলক শাসনে বিরক্ত।’
ইরানের শরিয়া আইনে নারীরা তাঁদের চুল ঢেকে রাখতে এবং লম্বা-ঢিলেঢালা পোশাক পরতে বাধ্য। যাঁরা এ আইন মানেন না, তাঁরা জনসাধারণের তিরস্কার, পুলিশের জরিমানা ও গ্রেপ্তারের সম্মুখীন হোন। কিন্তু সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ইরানের নারীরা পর্দা অপসারণের আহ্বান জানিয়ে আন্দোলন করছেন।