গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি সাক্ষরের বিষয়টি যেন চোরাবালিতে আটকে গেছে। এই প্রক্রিয়া এতটাই দীর্ঘায়িত হয়ে গেছে যে, এর সম্ভাবনা নিয়ে হতাশা ব্যক্ত করেছেন প্রধান মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতারের প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুর রহমান আল-থানি। গতকাল শনিবার জার্মানির মিউনিখে চলমান নিরাপত্তা সম্মেলনে তিনি এই হতাশা ব্যক্ত করেন।
সৌদি আরবের সংবাদমাধ্যম আল-আরাবিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় চলমান হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যকার সংঘাত নিরসনে সাম্প্রতিক দিনগুলোতে আলোচনা যে প্যাটার্নে চলছে, তা খুব বেশি ‘আশাব্যঞ্জক’ নয় বলে মন্তব্য করেছেন আবদুর রহমান আল-থানি।
আবদুর রহমান আল-থানি বলেছেন, ‘বিগত কয়েক দিনে যে প্যাটার্নে আলোচনা চলেছে, তা খুব একটা আশাব্যঞ্জক নয়। তবে আমি বারবার বলেছি, আমরা বিষয়টি নিয়ে সব সময়ই আশাবাদী এবং আমরা লক্ষ্য অর্জনে বিষয়টি নিয়ে কাজ করে যেতেই থাকব।’
কাতারের প্রধানমন্ত্রী আরও বলেছেন, ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যকার যুদ্ধবিরতির বিষয়টি ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির সঙ্গে একই পাল্লায় তুলে শর্ত হিসেবে জুড়ে দেওয়া উচিত হবে না। তিনি বলেন, ‘কিন্তু বাস্তবতা হলো, আমরা এই দ্বন্দ্বের মধ্যেই পড়ে গেছি।’ এ সময় তিনি কোনো দেশের নাম উল্লেখ না করে বলেন, ‘অনেক দেশই বিষয়টিকে অপব্যবহার করছে। তারা সব সময়ই যুদ্ধবিরতির সঙ্গে জিম্মি মুক্তির বিষয়টি শর্ত হিসেবে জুড়ে দিয়েছে।’
কাতারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটাকে এভাবে কখনোই শর্তযুক্ত করা উচিত নয়।’ উল্লেখ্য, কাতার ছাড়াও গাজায় যুদ্ধবিরতির বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র ও মিসর। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন একাধিকবার উল্লেখ করেছেন যে, তাঁর দেশ ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি ও যুদ্ধবিরতি নিশ্চিতের বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে এবং তাঁরা এটি অর্জন করে ছাড়বেন।
আবদুর রহমান আল-থানি বলেন, তিনি যুদ্ধবিরতি আলোচনার বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত বলতে চান না। তবে অতীতে যে যুদ্ধবিরতি হয়েছিল, সেখানে দুটি উপাদান ছিল। একটি হলো গাজার মানবিক পরিস্থিতি এবং হামাসের হাতে জিম্মি ইসরায়েলিদের বিনিময়ে ইসরায়েল কী পরিমাণ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেবে।
কাতারের এই শীর্ষ কূটনীতিক বলেন, ‘তবে আমরা এই চুক্তির ক্ষেত্রে একটি বড় এলাকা নিয়ে আলোচনা করছি এবং কিছু জটিলতার মুখোমুখি হয়েছি মানবিক সহায়তার বিষয়টি নিয়ে।’ তিনি এ সময় মত প্রকাশ করেন, যদি মানবিক জায়গা বিবেচনায় একবার যুদ্ধবিরতি কার্যকর করা যায়, তাহলে বন্দিবিনিময়ের বিষয়টি এমনিতেই মিটে যাবে।