ইসরায়েল গত শুক্রবার ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাসহ বিভিন্ন স্থানে হামলা চালিয়েছিল। সেই হামলার সূত্র ধরে দুই দেশের মধ্যে ব্যাপক সংঘাত শুরু হয়েছে। উভয় দেশই যুদ্ধংদেহী মনোভাব নিয়ে একে অপরের ওপর হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে ইরানে ইসরায়েলি হামলার তুলনায় ইসরায়েলে ইরানি হামলার তীব্রতা বেশি।
এই অবস্থায় আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) জানিয়েছে, গত শুক্রবারের হামলার পর ইরানের আর কোনো পারমাণবিক স্থাপনাই ইসরায়েলি হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। ইসরায়েল আজ সোমবারও ইরানের গভীরে হামলা চালানোর ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু নির্দিষ্ট করে কোথায় হামলা চালানো হয়েছে, সে বিষয়ে কোনো তথ্য দেয়নি।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, ইসরায়েলের হামলায় ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় আর কোনো ক্ষতির চিহ্ন নেই। এমনটাই জানিয়েছেন জাতিসংঘের পারমাণবিক নজরদারি সংস্থার প্রধান রাফায়েল গ্রোসি। ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ধ্বংসের লক্ষ্যে হামলা চালিয়েছিল।
এর আগে গ্রোসি ও তাঁর নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) জানিয়েছিল, ইরানের তিনটি সমৃদ্ধকরণ প্ল্যান্টের মধ্যে সবচেয়ে ছোটটি, অর্থাৎ নাতানজ পারমাণবিক কমপ্লেক্সের উপরিভাগের পাইলট প্ল্যান্টটি ধ্বংস হয়ে গেছে।
নাতানজের বড় ভূগর্ভস্থ সমৃদ্ধকরণ প্ল্যান্টে কোনো হামলার চিহ্ন না থাকলেও এর বিদ্যুৎ সরবরাহব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গেছে। এতে সেখানকার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ সেন্ট্রিফিউজ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। পাহাড়ের গভীরে থাকা ফোরদো প্ল্যান্টে কোনো ক্ষতি দেখা যায়নি।
গ্রোসি তাঁর সংস্থার ৩৫ জাতি পরিচালনা পর্ষদের এক বিশেষ বৈঠকে দেওয়া বিবৃতিতে জানান, গত শুক্রবার হামলার পর থেকে নাতানজ জ্বালানি সমৃদ্ধকরণ প্ল্যান্ট সাইটে কোনো অতিরিক্ত ক্ষতি হয়নি, যা পাইলট জ্বালানি সমৃদ্ধকরণ প্ল্যান্টের উপরিভাগের অংশ ধ্বংস করে দিয়েছিল।
তিনি আরও জানান, শুক্রবার ইরানের ইস্পাহান পারমাণবিক সাইটের চারটি ভবনে হামলা হয়েছিল। তাঁর ভাষ্যমতে, কেন্দ্রীয় রাসায়নিক পরীক্ষাগার, একটি ইউরেনিয়াম রূপান্তর প্ল্যান্ট, তেহরান চুল্লির জ্বালানি উৎপাদন প্ল্যান্ট ও নির্মাণাধীন ইউএফ ৪ (ইউরেনিয়াম টেট্রাফ্লুরাইড) থেকে ইইউ ধাতু প্রক্রিয়াকরণ সুবিধা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
গ্রোসি যোগ করেন, সংস্থা ইরানে আছে এবং থাকবে। নিরাপত্তা পরিস্থিতি অনুকূল হলে ইরানে সুরক্ষা পরিদর্শন অব্যাহত থাকবে, যা ইরানের (পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি) সুরক্ষা বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী প্রয়োজন। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ইরান পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ নিচ্ছে বলে জানা গেছে। এমনকি বিষয়টি ইরানের পার্লামেন্টেও আলোচিত হয়েছে।