হোম > বিশ্ব > মধ্যপ্রাচ্য

গাজা পুনর্গঠনে ট্রাম্পের বিকল্প প্রস্তাবে সম্মত আরব বিশ্ব, ব্যয় ৫৩০০ কোটি ডলার

মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসির সঙ্গে কথা বলছেন প্যালেস্টিনিয়ান অথোরিটির প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। ছবি: এএফপি

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা পুনর্গঠনে বিকল্প প্রস্তাব গ্রহণ করেছে আরব দেশগুলো। গতকাল মঙ্গলবার কায়রোতে অনুষ্ঠিত জরুরি আরব সম্মেলনে বিকল্প প্রস্তাবটি উত্থাপন করে মিসর; যা সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়েছে। সম্মেলনের সমাপনী বক্তব্যে মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি এ কথা জানিয়েছেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজাবাসীদের উৎখাত করে সেখানে ব্যাপকভিত্তিক অবকাঠামো নির্মাণের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন। এরপর পছন্দমতো ফিলিস্তিনিদের ঘরে ফেরার অনুমতি দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। এর জন্য মিসরসহ পার্শ্ববর্তী দেশগুলোকে ফিলিস্তিনিদের আশ্রয় দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তবে আরব বিশ্ব মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে নিজেরাই বিকল্প প্রস্তাব হাজির করেছেন।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের উৎখাত না করে কীভাবে উপত্যকাটি পুনর্নির্মাণ করা যায়, তা মাথায় রেখেই তৈরি করা হয়েছে প্রস্তাবটি। পরিকল্পনাটি তিনটি প্রধান ধাপে ভাগ করা হয়েছে—অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা, পুনর্গঠন ও শাসনব্যবস্থা। প্রথম ধাপ প্রায় ছয় মাস স্থায়ী হবে, আর পরবর্তী দুটি ধাপ একসঙ্গে চার থেকে পাঁচ বছর ধরে চলবে।

ইসরায়েলি হামলায় পুরোপুরিভাবে ধ্বংসস্তূপে পরিণত উপত্যকাটিকে পুনর্নির্মাণ করাই এই পরিকল্পনার মূল লক্ষ্য। পাশাপাশি পরিকল্পনাটিতে শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে উপত্যকাটিতে প্যালেস্টিনিয়ান অথোরিটি বা পিএর শাসনব্যবস্থা পুনরায় চালু করার কথাও বলা হয়েছে। ১৭ বছর আগে ফাতাহ–হামাসের মধ্যে সংঘাতের পর গাজা থেকে উৎখাত হয়েছিল রাজনৈতিক এই দল।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, ছয় মাসের অন্তর্বর্তী সময়ে পিএর অধীনে গাজার ধ্বংসাবশেষ অপসারণের কাজ শুরু করবে ফিলিস্তিনি প্রশাসকদের একটি কমিটি। উপত্যকার প্রধান মহাসড়ক সালাহ আল–দিন স্ট্রিট থেকে ধ্বংসাবশেষ সরানোর কাজ শুরু হবে। সড়কটি থেকে ধ্বংসাবশেষ সরানো হয়ে গেলে ১২ লাখ মানুষের জন্য ২ লাখ অস্থায়ী বাসস্থান নির্মাণ করা হবে। পুনর্নির্মাণ করা হবে ৬০ হাজার ক্ষতিগ্রস্ত ভবন।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, দীর্ঘমেয়াদি পুনর্গঠনের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থার পর আরও চার থেকে পাঁচ বছর সময় লাগবে। এই সময়ের মধ্যে অন্তত ৪ লাখ স্থায়ী বাসস্থান নির্মাণ, পাশাপাশি গাজার সমুদ্রবন্দর ও আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পুনর্নির্মাণের কাজ পুরোদমে চলবে।

পর্যায়ক্রমে খাওয়ার পানি, পয়োনিষ্কাশনের ব্যবস্থা, টেলিযোগাযোগ পরিষেবা এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনঃস্থাপন করা হবে।

বিশাল এই কর্মযজ্ঞ পরিচালনায় প্রয়োজন বিপুল পরিমাণ অর্থ; যার দেখভালে গঠন করা হবে স্টিয়ারিং ও ম্যানেজমেন্ট কাউন্সিল। এই পরিকল্পনা অনুযায়ী গাজা পুনর্গঠনে ৫ হাজার ৩০০ কোটি ডলারের প্রয়োজন হবে। বিপুল এই অর্থ নিশ্চিতে আন্তর্জাতিক দাতাদের সঙ্গেও শিগগিরই একটি সম্মেলনে বসতে যাচ্ছে আরব দেশগুলো।

পরিকল্পনাটিতে গাজায় ‘স্বাধীন ফিলিস্তিনি প্রশাসকদের’ একটি দলকে প্রশাসনিক দায়িত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে, যে পরিকল্পনায় কার্যত হামাসকে বাদ দেওয়া হবে। এই টেকনোক্র্যাট সরকার মানবিক সহায়তা তদারকি করবে এবং গাজার প্রশাসন পরিচালনার জন্য পিএর পথ সুগম করবে বলে জানিয়েছেন মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি।

অবশ্য পরিকল্পনায় কোনো নির্বাচনের উল্লেখ নেই। যদিও মঙ্গলবারের শীর্ষ সম্মেলনে পিএ প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বলেন, যদি পরিস্থিতি অনুকূল থাকে তবে আগামী বছর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। নির্বাচনের আহ্বানকে স্বাগত জানিয়েছে হামাস।

নিরাপত্তার বিষয়ে মিসর ও জর্ডান উভয়েই ফিলিস্তিনি পুলিশ সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেওয়া এবং তাদের গাজায় মোতায়েন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এ ছাড়া, দেশ দুটি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে গাজায় প্রশাসনিক কার্যক্রম তদারকির জন্য একটি শান্তিরক্ষী মিশন অনুমোদনেরও আহ্বান জানিয়েছে।

এদিকে, মিসরের গাজা পরিকল্পনা নিয়ে ক্ষুব্ধ ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী। এই পরিকল্পনাকে ‘গোঁয়ার্তুমি, চরমপন্থী ও অগ্রহণযোগ্য’ আখ্যা দিয়েছে তাঁর সরকার।

ধ্বংসস্তূপের মধ্যেই গাজার ইসলামিক ইউনিভার্সিটিতে পাঠদান শুরু

ইসরায়েলি সেটেলারদের আগ্রাসন ঠেকাতে ফিলিস্তিনি গ্রামে মানবঢাল একদল স্বেচ্ছাসেবক

সিরিয়ায় একযোগে ৭০ স্থানে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলা

সমুদ্র উপকূলে পাওয়া গ্যাস বিক্রি করে গাজা পুনর্গঠনের পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্র–আরব আমিরাত ও ইসরায়েলের

আরব বসন্তে ক্ষমতাচ্যুত একনায়কেরা এখন কোথায় কেমন আছেন

পশ্চিম তীরে এক বছরে ১৫০০ বাড়ি ভেঙেছে ইসরায়েল, ভাঙবে আরও ২৫টি

বৃষ্টি, বন্যা আর আবর্জনা: গাজাবাসীর অন্তহীন শীতের রাতের দুঃসহ বেদনা

গাজায় হামলা চালিয়ে হামাসের শীর্ষ কমান্ডারকে হত্যার দাবি ইসরায়েলের

সিরিয়ায় আইএসের হামলায় দুই মার্কিন সেনা এবং এক দোভাষী নিহত

এবার ডিজেলবাহী ট্যাংকার জব্দ করল ইরান, বাংলাদেশিসহ ১৮ ক্রু আটক