ফিলিস্তিনের বেথলেহেম শহরে জন্ম নিয়েছিলেন যিশুখ্রিষ্ট। মুসলমানদের কাছে যিনি হজরত ঈসা (আ.) নামে পরিচিত। প্রতিবার যিশুখ্রিষ্টের জন্মদিন বা বড়দিনে ফিলিস্তিনের বেথলেহেম শহরে জড়ো হন সারা বিশ্বের অসংখ্য মানুষ। এবার সেই চিত্রটা ভিন্ন; এবার যিশুর জন্মদিনে তাঁর জন্মস্থানে নেই কোনো ক্রিসমাস ট্রি, প্যারেড বা আনন্দ-সংগীত। সান্তাক্লজের লজেন্স কিংবা মিষ্টি বিতরণও পড়েনি চোখে।
কারণ, যিশুর জন্মস্থানে নেমেছে যুদ্ধের শোক। এক বিরান ভূমিতে পরিণত হয়েছে বেথলেহেম। ইসরায়েলের বর্বর হামলায় গাজায় নিহত হয়েছে হাজারো শিশু। সেই শিশুদের স্মরণেই গির্জার ভেতর শিশু যিশুর প্রতিকৃর্তি স্থাপন করা হয়েছে ধ্বংসস্তূপের ওপর। সেখানে কোনো তীর্থযাত্রী বা পর্যটকের আনাগোনাও নেই।
বেথেলহেমের ইভানজেলিকাল লুথেরান ক্রিসমাস চার্চের যাজক রেভারেন্ড ড. মুনথার ইসহাক আল-জাজিরাকে বলেন, ‘এ বছর বেথেলহেমে বড়দিন পালন করা হচ্ছে না। এর পেছনে যৌক্তিক কারণ রয়েছে। গাজায় যখন গণহত্যা চলছে তখন বড়দিন উদযাপন করা অসম্ভব।’
ধ্বংসস্তুপের ওপর শিশু যিশু ক্রিস্টের প্রতিকৃতি দেখিয়ে মুনথার ইসহাক আরও বলেন, ‘যখন সারা বিশ্বে সবাই বড়িদিন পালন করছে, তখন আমরা এই বার্তা দিতে চাই যে, ফিলিস্তিনে বড়দিন দেখতে এমনই। বেথেলহেমে বড়দিন এবার এমনই। যিশুর জন্মস্থানে ধ্বংসস্তুপের ভেতর থেকে শিশুদের উদ্ধার করা হচ্ছে। শত শত পরিবারকে বাস্তুচ্যুত করা হয়েছে। তাঁদের বাড়িঘর মাটিতে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে। যিশুর জন্মও হয়েছিল দখলকৃত ফিলিস্তিনে, তাই শিশু যিশু নিপীড়িত ফিলিস্তিনের পক্ষেই।’
ইসরায়েলের হামলায় প্রতিদিনই প্রাণ হারাচ্ছেন এই শহরের অসংখ্য বেসামরিক মানুষ। সবচেয়ে বেশি প্রাণ হারাচ্ছেন নারী ও শিশুরা।
বেথলেহেমের আফতেম রেস্তোরাঁর মালিকদের একজন আলা সালামেহ বার্তা সংস্থা এপিকে বলেন, ‘এই যুদ্ধের মধ্যে আমরা ক্রিসমাস ট্রি লাগিয়ে বড়দিন উদ্যাপন করতে পারি না, যখন অসংখ্য লোকের (গাজায়) মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই।’