হোম > বিশ্ব > মধ্যপ্রাচ্য

রাফাহে প্রস্তাবিত ‘মানবিক শহর’ হবে ফিলিস্তিনিদের কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প: ইসরায়েলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­

এহুদ ওলমার্ট। ছবি: দ্য গার্ডিয়ানের সৌজন্যে

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ গাজার রাফাহে একটি ‘মানবিক শহর’ তৈরি করে সেখানে সব গাজাবাসীকে স্থানান্তর করার প্রস্তাব দিয়েছেন। তবে এই প্রস্তাবের ঘোর বিরোধিতা করেছেন ইসরায়েলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এহুদ ওলমার্ট। তিনি বলেছেন, এই মানবিক শহর ফিলিস্তিনিদের জন্য ‘কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প’ হয়ে উঠবে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এহুদ ওলমার্ট বলেছেন, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী যে ‘মানবিক শহর’ গড়ে তোলার প্রস্তাব দিয়েছেন, সেটি বাস্তবে কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প হয়ে দাঁড়াবে। সেখানে ফিলিস্তিনিদের জোর করে পাঠানো হলে তা হবে জাতিগত নির্মূলীকরণের প্রচেষ্টা।

ওলমার্ট বলেন, গাজা ও পশ্চিম তীরে ইসরায়েল এরই মধ্যে যুদ্ধাপরাধ করছে। আর যদি মানবিক শহর নির্মাণের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হয়, তাহলে তা হবে আরও একটি ভয়াবহ ধাপ। ওলমার্ট বলেন, ‘এটি একটি কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প। আমি দুঃখিত, কিন্তু এটাই সত্যি।’

কাৎজ এর আগে বলেন, এই ক্যাম্পে পাঠানো হলে ফিলিস্তিনিরা শুধু তখনই সেখান থেকে বের হতে পারবে, যখন তারা অন্য কোনো দেশে যাবে। তিনি এরই মধ্যে সামরিক বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন, যেন তারা গাজার দক্ষিণ অংশে মানবিক শহর নির্মাণের কার্যক্রম শুরু করে। প্রথমে সেখানে ছয় লাখ ফিলিস্তিনিকে রাখা হবে এবং পরে পুরো গাজার জনগণকেই সেখানে পাঠানো হবে বলে জানা গেছে।

ওলমার্ট বলেন, ‘যদি ফিলিস্তিনিদের এই নতুন মানবিক শহরে জোর করে পাঠানো হয়, তবে সেটি হবে জাতিগত নির্মূলের অংশ। এখনো তা ঘটেনি, তবে যদি ঘটে, তাহলে সেটিকে আমি এভাবেই ব্যাখ্যা করব।’

তবে ওলমার্ট মনে করেন, বর্তমানে ইসরায়েলের অভিযান ‘জাতিগত নির্মূলীকরণ’ নয়। কারণ, আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে সংঘর্ষ থেকে রক্ষা করতে বেসামরিকদের সরিয়ে নেওয়া বৈধ। তিনি দাবি করেন, সেনা অভিযান শেষে কিছু ফিলিস্তিনি তাদের এলাকায় ফিরেছে।

এদিকে, কাৎজ প্রস্তাবিত এই মানবিক শহর প্রকল্পকে সমর্থন দিচ্ছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুও। তবে যে এলাকায় এই শহর নির্মাণের পরিকল্পনা, তা থেকে ইসরায়েল সেনা প্রত্যাহারে রাজি না হওয়াতেই যুদ্ধবিরতির আলোচনায় অগ্রগতি থেমে আছে বলে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে।

ওলমার্ট বলেন, ‘যখন সরকার গাজার অর্ধেক জনগণকে “উচ্ছেদ” করে ক্যাম্পে পাঠানোর পরিকল্পনা করে, তখন এটা মানবিক উদ্দেশ্যে করা হচ্ছে বলে আর বিশ্বাসযোগ্য নয়। এটা আসলে তাদের তাড়িয়ে দেওয়ার কৌশল।’

ইসরায়েলের মানবাধিকার আইনজীবী এবং গবেষকেরা বলছেন, এই পরিকল্পনা মানবতাবিরোধী অপরাধের রূপরেখা এবং কিছু বিশেষ শর্তে তা গণহত্যার পর্যায়েও পড়তে পারে। এ ছাড়া যেসব ইসরায়েলি এই মানবিক শহর পরিকল্পনাকে নাৎসি জার্মানির কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পের সঙ্গে তুলনা করেছেন, তাঁদের সরকারের পক্ষ থেকে প্রচণ্ড সমালোচনা করা হয়েছে। ইসরায়েলের হলোকাস্ট স্মৃতি সংগ্রহশালা ‘ইয়াদ ভাশেম’ এক সাংবাদিককে এই তুলনার জন্য ‘হলোকাস্টের তাৎপর্য বিকৃত করার’ অভিযোগে অভিযুক্ত করে।

উল্লেখ্য, ২০০৬ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা এহুদ ওলমার্ট এই মন্তব্য করেন এমন এক দিনে, যেদিন পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের গুলিতে এক মার্কিনিসহ নিহত দুই ফিলিস্তিনির দাফন সম্পন্ন হয়।

গাজায় নতুন শাসনকাঠানো কার্যকর শিগগির: মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ধ্বংসস্তূপের মধ্যেই গাজার ইসলামিক ইউনিভার্সিটিতে পাঠদান শুরু

ইসরায়েলি সেটেলারদের আগ্রাসন ঠেকাতে ফিলিস্তিনি গ্রামে মানবঢাল একদল স্বেচ্ছাসেবক

সিরিয়ায় একযোগে ৭০ স্থানে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলা

সমুদ্র উপকূলে পাওয়া গ্যাস বিক্রি করে গাজা পুনর্গঠনের পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্র–আরব আমিরাত ও ইসরায়েলের

আরব বসন্তে ক্ষমতাচ্যুত একনায়কেরা এখন কোথায় কেমন আছেন

পশ্চিম তীরে এক বছরে ১৫০০ বাড়ি ভেঙেছে ইসরায়েল, ভাঙবে আরও ২৫টি

বৃষ্টি, বন্যা আর আবর্জনা: গাজাবাসীর অন্তহীন শীতের রাতের দুঃসহ বেদনা

গাজায় হামলা চালিয়ে হামাসের শীর্ষ কমান্ডারকে হত্যার দাবি ইসরায়েলের

সিরিয়ায় আইএসের হামলায় দুই মার্কিন সেনা এবং এক দোভাষী নিহত