গাজায় দিনে দিনে আরও আগ্রাসী হচ্ছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। আজ শুক্রবারও উপত্যকাজুড়ে বর্বরতা চালিয়ে যাচ্ছে তারা। কাতারি সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, আজ ভোর থেকে এখন পর্যন্ত গাজাজুড়ে বিভিন্ন স্থানে অন্তত ৩০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। নিহতদের পাঁচজনই ইসরায়েল ঘোষিত আল-মাওয়াসিতে অবস্থান করছিল।
স্থানীয় সাংবাদিকদের তথ্য অনুযায়ী, নিহতদের মধ্যে ১০ জনই গাজা সিটির বাসিন্দা। এ ছাড়া খান ইউনিস ও বুরেজি শরণার্থীশিবিরেও ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। শরণার্থীদের তাঁবু লক্ষ্য করে চালানো হচ্ছে হামলা।
গাজা সিটির শেখ রেদওয়ান এলাকায় ধারাবাহিকভাবে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফ। নিহাদ মাদুখ নামের এক বাসিন্দা আল জাজিরাকে সাম্প্রতিক ভয়ংকর হামলার বর্ণনা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘শরণার্থীদের অস্থায়ী তাঁবু থেকে মাত্র ১৫০ মিটার দূরে আঘাত হাতে তাদের ছোড়া একটি ফায়ারবেল্ট। পুরো এলাকা আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। শুধু তাই নয়, তারা হেলিকপ্টার থেকেও নির্বিচারে গুলি চালায়। এমন ভয়ংকর বোমাবর্ষণের মুখে পড়লে মনে হয় না বাঁচার আর কোনো আশা আছে।’
জীবন বাঁচাতে ক্রমাগত এক স্থান থেকে আরেক স্থানে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন ফিলিস্তিনিরা। তবে, কোথাও কোনো স্থানই তাদের জন্য আর নিরাপদ নয়।
গতকাল বৃহস্পতিবারও গাজাজুড়ে অর্ধশতাধিক ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে নেতানিয়াহুর বাহিনী। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, উপত্যকাজুড়ে ৬১ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েল। তাদের মধ্যে রয়েছে ১৯ ত্রাণকর্মীও।
গাজার পাশাপাশি পশ্চিম তীরেও আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে তেলআবিব। জঙ্গি নির্মূলের নামে প্রতিনিয়ত চলছে সাঁড়াশি অভিযান। ফিলিস্তিনিদের বাড়িঘর, দোকানপাটে লুটতরাজ হয়ে উঠেছে সাধারণ ঘটনা। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রেড ক্রিসেন্টের তথ্য অনুযায়ী, নাবলুসের সালেম শহরে ইসরায়েলি দখলদারদের চালানো গুলিতে আহত হয়েছে এক ফিলিস্তিনি। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাঁকে প্রায় এক ঘণ্টা আটকে রেখেছিল দখলদারেরা। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়।
বার্তা সংস্থা ওয়াফার তথ্যমতে, নাবলুসের ফয়সাল স্ট্রিটেও ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়েছে আরও দুই ফিলিস্তিনি। এ ছাড়া, বেথলেহেমসহ পশ্চিম তীরের আরও কয়েকটি শহরে ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানা গেছে।