ভারতের গুজরাট রাজ্যে গর্ভবতী নারীকে ধর্ষণ এবং ৭ জনকে খুনের অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত ১১ জনের মুক্তি দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে জনস্বার্থ মামলা গ্রহণ করেছেন ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট। সিপিএম নেত্রী সুভাষিণী আলি ও আরও দুজন এই মামলা দায়ের করেন। ভারতের সর্বোচ্চ আদালত জানিয়েছেন, সঠিক সময়েই এই বিষয়ে মামলার শুনানির দিন ধার্য করা হবে।
২০০২ সালে গুজরাট দাঙ্গার সময় গোধরায় ট্রেনে অগ্নিসংযোগের ঘটনার কিছুদিন পর নিজ বাড়িতে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন সেই সময়ে ৫ মাসের গর্ভবতী বিলকিস বানু। তাঁর চোখের সামনে আছড়ে মাথা গুঁড়িয়ে দিয়ে হত্যা করা হয় তিন বছরের সন্তানকে। সেদিন বিলকিস বানুর পরিবারের মোট ৭ জন খুন হন। সেই ঘটনায় আদালত সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন। এবং মামলাটিকে গুজরাট থেকে মহারাষ্ট্রের আদালতে স্থানান্তর করেন।
পরে ২০০৮ সালে মুম্বাইয়ে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত ১১ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেন এবং তাদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। সেই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হলে মহারাষ্ট্র হাইকোর্ট সেই রায়ই বহাল রাখেন। তারপর থেকেই কারাবন্দী ছিলেন ওই ১১ জন।
কিন্তু চলতি বছরের ১৫ আগস্ট ভারতের ৭৫ তম স্বাধীনতা দিবসে ১১ জনকেই মুক্তি দেয় গুজরাটে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার। গুজরাট সরকারের এই সিদ্ধান্তে দেশজুড়ে শুরু হয় বিতর্ক। বিজেপি সরকারের বক্তব্য, বিগত ১৪ বছর জেলে খুব ভালো ব্যবহার করেছেন কয়েদিরা। তাই আইন মেনেই তাদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে। তবে সরকারের এই কৌশলী বক্তব্য ছাপিয়ে গোধরার বিজেপি বিধায়ক সিকে রাউলজি ধর্ষকদের মূল্যবোধের প্রশংসা করে তাদের ব্রাহ্মণ বংশে জন্মানোর কথাও মুক্তির স্বপক্ষে যুক্তি দাঁড় করান।
তবে নির্যাতনের শিকার বিলকিস এই সিদ্ধান্তে মর্মাহত। বিলকিসের আর্তনাদ, ‘আমি ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। আমাকে সুস্থভাবে বাঁচতে দিন।’