হোম > বিশ্ব > ভারত

মোদী সরকারের নির্বাচনী বন্ড অবৈধ, ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের ঐতিহাসিক রায়

নির্বাচনে গোপনে তহবিল জোগাতে ভারতে বন্ড চালু করেছিল নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার। তবে আজ বৃহস্পতিবার সেই বন্ড চালুর বিষয়টিকে অবৈধ বলে ঘোষণা করেছেন দেশটির সর্বোচ্চ আদালত। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এই বন্ডকে অসাংবিধানিক বলে আখ্যা দেন। 

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই রায় দিয়েছেন। প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় ছাড়াও সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চের অপর চার বিচারপতি হলেন—বিচারপতি সঞ্জীব খান্না, বিচারপতি বি আর গ্যাভাই, বিচারপতি জে বি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্র। 

প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় এই বন্ডকে অসাংবিধানিক আখ্যা দিয়ে বলেন, এটি আরোপিত এবং এ ধরনের বন্ড রাজনৈতিক দল ও দাতাদের মধ্যে একধরনের পারস্পরিক নির্ভরশীলতার জায়গা তৈরি করতে পারে, যা অবৈধভাবে দাতাদের ও রাজনৈতিক দলগুলোকে সুবিধা দেবে। 

পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ বলেছেন, কালোটাকার বিরুদ্ধে লড়াই করা এবং দাতাদের গোপনীয়তা বজায় রাখার যে উদ্দেশ্য এই বন্ড প্রকল্পে উল্লেখ করা হয়েছে, তা এই প্রকল্পকে অবৈধ ঘোষণার হাত থেকে রক্ষার জন্য কোনো রক্ষাকবচ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে না। একই সঙ্গে নির্বাচনী বন্ড কালোটাকা রোধ করার একমাত্র উপায়ও নয়। 

প্রধান বিচারপতি এই রায়ের বিস্তারিত প্রকাশের পরপরই ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংককে নির্বাচনী বন্ড ইস্যু বন্ধ করতেও নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে এই বন্ডের মাধ্যমে কী পরিমাণ অর্থ সংগৃহীত হয়েছে, তা আগামী ৩১ মার্চের মধ্যেই ভারতের নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশেরও নির্দেশ দিয়েছেন। 

সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চের পাঁচ বিচারপতির সর্বসম্মত রায়ে এই বন্ড প্রকল্পকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়। রায়ে প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন, ‘আমরা একটি সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি। তবে এখানে আমাদের দুটি মতামত রয়েছে। একটি আমার নিজের, অপরটি বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার। তবে আমরা দুজন একই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি।’ 
 
এর আগে, ২০১৮ সালের ২ জানুয়ারি তৎকালীন বিজেপি সরকার এই বন্ড প্রকল্প চালু করে। মূলত রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী তহবিলে স্বচ্ছতা আনতে এবং নগদ টাকায় অনুদান দেওয়ার বিষয়টি কমিয়ে আনতে এই উদ্যোগ নেয় সরকার। 

নির্বাচনী এই বন্ডের মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি বা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান চাইলে তাদের পরিচয় প্রকাশ না করে রাজনৈতিক দলগুলোকে তহবিল দেওয়ার সুযোগ দেয়। এই প্রকল্পের বিধান অনুসারে, ভারতের যেকোনো নাগরিক বা দেশে নিবন্ধিত যেকোনো প্রতিষ্ঠান নির্বাচনী বন্ড কিনতে পারবে। ভারতে ১ হাজার রুপি থেকে শুরু করে ১ কোটি রুপি মূল্যমানের বন্ড পাওয়া যায়। সুদমুক্ত এই বন্ড ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার সব শাখায় পাওয়া যায়। 

এই বন্ডের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা আবেদনকারীরা যুক্তি দেন, নির্বাচনী বন্ড স্কিম নাগরিকদের রাজনৈতিক দলগুলোর তহবিলের উৎস সম্পর্কে জানার অধিকারের বিষয়টিকে খর্ব করে, যা ভারতের সংবিধানের ১৯ (১) (এ) অনুচ্ছেদে উল্লেখিত একটি মৌলিক অধিকার। 

তবে এই বন্ডের বৈধতার পক্ষে মত ব্যক্ত করে সুপ্রিম কোর্টে শুনানির সময় অ্যাটর্নি জেনারেল আর ভেঙ্কটারমানি যুক্তি দিয়েছিলেন, ভারতের সংবিধানের ১৯ (১) (এ) অনুচ্ছেদ নাগরিকদের নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলের তহবিলের জন্য ব্যবহৃত তহবিলের উৎস সম্পর্কিত তথ্যের নিরঙ্কুশ অধিকারের নিশ্চয়তা দেয় না। অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘নির্বাচনী বন্ড স্কিম নির্বাচনে স্বচ্ছতা ও স্বচ্ছ অর্থ প্রদানের বিষয়টিকেই উৎসাহিত করে।’ 

ভারতের জনপ্রতিনিধিত্ব আইন, ১৯৫১-এর ধারা ২৯ এ-এর অধীনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলো এবং বিগত লোকসভা বা রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনে ১ শতাংশের বেশি ভোট না পাওয়া দলগুলোই নির্বাচনী বন্ড পাওয়ার যোগ্য। বন্ড স্কিম অনুসারে, এই বন্ডগুলো কেবল যোগ্য রাজনৈতিক দলগুলো অনুমোদিত ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে টাকায় রূপান্তর করা যাবে।

বায়ুদূষণ সূচকে সর্বোচ্চ সীমায় দিল্লি, জনজীবন বিপর্যস্ত

পাকিস্তানের গুপ্তচর সন্দেহে আসামে ভারতীয় বিমানবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা গ্রেপ্তার

অধৈর্য হয়ে পুতিন-এরদোয়ানের রুদ্ধদ্বার বৈঠকে দরজা ঠেলে ঢুকে পড়লেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী

এবার ভারতের ওপর মেক্সিকোর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ, বিলিয়ন ডলার ক্ষতির আশঙ্কা

ভারতের নাইটক্লাবে অগ্নিকাণ্ড: মালিক ভ্রাতৃদ্বয় থাইল্যান্ডে আটক

মোদির সঙ্গে রাহুলের ৮৮ মিনিটের বৈঠক, কী আলোচনা হলো

সোশ্যাল মিডিয়া খতিয়ে দেখবে যুক্তরাষ্ট্র, ভারতীয়দের এইচ-১বি ভিসা অ্যাপয়েন্টমেন্ট স্থগিত

‘বঙ্কিমদার’ বন্দে মাতরমকে জাতীয় সংগীত না করায় নেহেরুকে মোদির তোপ

দেবরের পর এবার গাঁজাসহ গ্রেপ্তার মধ্যপ্রদেশের মন্ত্রীর ভাই

পাকিস্তান আর গণতন্ত্র একসঙ্গে যায় না—ইমরান খানকে নিয়ে প্রশ্নের জবাবে ভারতীয় মুখপাত্র