বলরামপুর (উত্তর প্রদেশ): করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিপর্যস্ত ভারত। অবশ্য অনেক রাজ্যে শনাক্ত ও মৃত্যু কমতে শুরু করেছে। এরপরও সংক্রমণ পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। সপ্তাহখানেক আগে বিশ্ব মিডিয়ায় উঠে এসেছিল, ভারতে গঙ্গায় ভাসছে করোনা রোগীদের মৃতদেহ। এ ছাড়া নদীর তীরে বালিচাপা মৃতদেহও পাওয়া গেছে বেশ কয়েকটি। এবার দেশটির উত্তর প্রদেশ রাজ্যে নদীতে করোনা রোগীর মৃতদেহ ফেলার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
আজ রোববার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ২৮ মে উত্তর প্রদেশের বলরামপুরে গাড়িতে করে যাচ্ছিলেন দুই ব্যক্তি। তাঁদের ক্যামেরায় ধরা পড়ে দুজন ব্যক্তি রাপ্তি নদীর ওপর ব্রিজ থেকে একটি লাশ নদীতে ছুড়ে ফেলছে। ওই দুই ব্যক্তির একজন ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) পরা ছিলেন। ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।
বলরামপুর জেলার প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন, নদীতে ছুড়ে ফেলা ব্যক্তি করোনায় মারা গিয়েছিলেন। তাঁর স্বজনরাই লাশটি নদীতে ফেলার চেষ্টা করছিলেন। এ ঘটনায় দুজন স্বজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ওই দুই ব্যক্তির হাতে যাঁরা কোভিড আক্রান্ত রোগীর মরদেহ তুলে দিয়েছেন, সেই স্বজনদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করা হয়েছে।
বলরামপুরের প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা ভি বি সিং বলেন, যে মরদেহটি নদীতে ফেলা হচ্ছিল তিনি গত ২৫ মে হাসপাতালে ভর্তি হন এবং ২৮ মে মারা যান। করোনার প্রটোকল মেনেই মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। কিন্তু স্বজনেরা মরদেহটি নদীতে ফেলে দেন। এ ঘটনায় স্বজনদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, এর আগে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার উত্তর প্রদেশকে করোনায় মারা যাওয়াদের মরদেহ নদীতে না ফেলার নির্দেশ দিয়েছিল। রাজ্যগুলোর কাছে লেখা এক চিঠিতে কেন্দ্রীয় সরকার নদীতে লাশ ছুড়ে ফেলা বন্ধ করতে নদীর তীরবর্তী অঞ্চলগুলোতে টহল বাড়ানোর আহ্বানও জানিয়েছিল।
চিঠিতে বলা হয়েছিল, অনেকেই সচেতনতার অভাব ও সৎকারের অর্থের জোগানে ব্যর্থ হয়ে করোনায় মৃত স্বজনদের লাশ নদীতে ফেলতে বাধ্য হচ্ছেন।