কানাডার ওন্টারিও প্রদেশে বাড়িতে রহস্যজনক অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ হয়ে কিশোরী মেয়েসহ এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত দম্পতির মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার আট দিন পর গতকাল শুক্রবার দগ্ধ মৃতদেহগুলো শনাক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
নিহতরা হলেন ৫১ বছর বয়সী রাজিব ওয়ারিকু, তাঁর স্ত্রী শিল্পা কোঠা (৪৭) এবং তাঁদের ১৬ বছর বয়সী মেয়ে মেহেক ওয়ারিকু। ওন্টারিওর আবাসিক এলাকা বিগ স্কাই ওয়ে অ্যান্ড ভ্যান কার্ক ড্রাইভের বাড়িতে থেকে তাঁদের মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
গৃহস্থালির কাজ থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে ধারণা করা হলেও প্রাথমিক তদন্তের পর আগুনের সূত্রপাত দুর্ঘটনাবশত ঘটেনি বলে মনে করছে পুলিশ। এ অগ্নিকাণ্ডকে সন্দেহজনক উল্লেখ করে কনস্টেবল তারিন ইয়াং বলেন, আগুনের সূত্রপাত জানার জন্য তাঁরা সমস্ত প্রমাণসহ চিরুনি তল্লাশি চালাচ্ছেন।
কানাডার সংবাদমাধ্যম সিটিভি চ্যানেলকে ইয়াং বলেন, ‘এ ঘটনাকে আমরা সন্দেহজনক বলে মনে করছি। কারণ ওন্টারিও ফায়ার মার্শাল মনে করছেন, এই আগুন দুর্ঘটনাজনিত ছিল না।’
এক বিজ্ঞপ্তিতে পুলিশ বলেছে, গত ৭ মার্চ ব্র্যাম্পটনের বিগ স্কাই ওয়ে অ্যান্ড ভ্যান কার্ক ড্রাইভের একটি বাড়িতে এই অগ্নিকাণ্ড ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী বলছেন, পুরো বাড়িতে আগুন ছড়িয়ে পড়ার আগে তাঁরা একটি বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পেয়েছিলেন। ওয়ারিকু পরিবারের প্রতিবেশী কেনেথ ইউসেফ বলেন, গত সপ্তাহে বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পেয়ে পরিবারের এক সদস্য তাঁকে আগুন লাগার বিষয়ে সতর্ক করেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই যখন দৌড়ে বের হই, ততক্ষণে বাড়িটিতে আগুন লেগে যায়। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আগুনে সবকিছু ধুলোয় মিশে যায়।’
আগুন নিভে যাওয়ার পর পুলিশ পুড়ে যাওয়া বাড়িটির ভেতরে মানুষের দেহাবশেষ খুঁজে পায়। তবে কতজন নিহত হয়েছে, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এক বিবৃতিতে পুলিশ বলেছে, ‘ঘটনাস্থল পর্যবেক্ষণ করার সময় তদন্তকারীরা একটি দুর্ভাগ্যজনক বিষয় আবিষ্কার করেন। ধ্বংসপ্রাপ্ত বাড়ির মধ্যে মানুষের দেহাবশেষ খুঁজে পান তাঁরা। দেহাবশেষগুলো ৫১ বছর বয়সী রাজিব ওয়ারিকু, ৪৭ বছর বয়সী শিল্পা কোঠা এবং ১৬ বছর বয়সী মেহেক ওয়ারিকুর বলে শনাক্ত করা গেছে। অগ্নিকাণ্ডের আগে নিহত তিনজনই ওই বাড়িতে বসবাস করতেন।’
রাজিব ওয়ারিকু টরোন্টো পুলিশে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করেছেন এবং ২০১৬ সালে তাঁর মেয়াদ শেষ হয়। এই তিন মৃত্যু ঘিরে কারও কাছে কোনো তথ্য থাকলে এগিয়ে আসার আহ্বান জানায় পুলিশ।