ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের কৃষকেরা পেঁয়াজের ন্যায্যমূল্যের দাবিতে মুম্বাই অভিমুখে ২০০ কিলোমিটারের পদযাত্রা শুরু করেছেন। পেঁয়াজের দাম কম হওয়ায় লোকসান কাটিয়ে উঠতে কৃষকদের কিছু আর্থিক সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছে সরকার। কিন্তু সেই প্রস্তাব মানতে নারাজ কৃষকেরা। তাঁরা বলছেন, পেঁয়াজের ন্যায্য দাম পাওয়া নিয়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
বিবিসির প্রতিবেদনে জানা যায়, সড়কে পেঁয়াজ ফেলে বিক্ষোভ করেন কৃষকেরা। মহারাষ্ট্র রাজ্যের নাসিক জেলার নামদেব ঠাকরের পারিবারিক খামারে সারি সারি পেঁয়াজ পড়ে আছে। এই কৃষক বলেন, মাঠ থেকে পেঁয়াজ সংগ্রহ করতে এবং বাজারজাত করতে শ্রমিক নিয়োগ দিয়ে অর্থ খরচ করতে চান না তিনি। কারণ পেঁয়াজ বিক্রি করে সেই খরচ তুলতে পারবেন না। নামদেব ঠাকরের মতো মহারাষ্ট্রের হাজার হাজার কৃষক কয়েক সপ্তাহ ধরে পেঁয়াজের দাম কমে যাওয়ার কারণে বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন।
সড়কে পেঁয়াজ ফেলে বিক্ষোভ করছেন কৃষকেরা। এমনকি রাজ্যের এক কৃষক নিজের খেতের ফসল পুড়িয়ে দিয়েছেন। আরও অনেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য পেঁয়াজ পার্সেলের মতো বিভিন্ন কর্মকাণ্ড করছেন।
বছরে প্রায় ২৪ মিলিয়ন টন পেঁয়াজ উৎপাদিত হয় ভারতে। চীনের পরে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পেঁয়াজ উৎপাদনকারী এ দেশটির অর্ধেকের বেশি উৎপাদন হয় মহারাষ্ট্রেই। উৎপাদিত পেঁয়াজের প্রায় ১০ থেকে ১৫ শতাংশ রপ্তানি করা হয়।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, মহারাষ্ট্রে পেঁয়াজ নিয়ে কৃষকদের এমন বিপর্যয়ে পড়ার কারণ হচ্ছে দেশটির উত্তরের রাজ্যগুলোর চাহিদা হ্রাস পাওয়া। উত্তর প্রদেশ, বিহার, রাজস্থানের মতো রাজ্যে এবার পেঁয়াজ চাষ করেছেন কৃষকেরা।
কুয়ালেকার আরও বলেন, গত বছর ভারতে জুলাই ও আগস্ট মাসে ভারী বৃষ্টিপাত হয়। ফলে কৃষকেরা দেরিতে পেঁয়াজ রোপণ করেন। ফলে মার্চ মাসে পেঁয়াজের ফলন উদ্বৃত্তের দিকে যাচ্ছে। আগাম পেঁয়াজ ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারিতে তোলা হতো। এসব কারণে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
মহারাষ্ট্রের কৃষকেরা বলছেন, তাঁরা পাইকারি বাজারে প্রতি ১০০ কেজি পেঁয়াজের জন্য মাত্র ২০০ থেকে ৩০০ রুপি পাচ্ছেন। ফলে ১ কেজির দাম পড়ে ২ থেকে ৪ রুপি মাত্র। এমন পরিস্থিতিতে নিরুপায় হয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন তাঁরা।