ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার সাম্প্রতিক যুদ্ধকে ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের ঐতিহাসিক স্বাধীনতাযুদ্ধের সঙ্গে মেলাতে চান না ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের নেতা ও এমপি শশী থারুর। সাম্প্রতিক সময়ে ১৯৭১ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর ভূমিকার সঙ্গে ভারতে ক্ষমতাসীন বিজেপি নেতারা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভূমিকার তুলনা দেওয়ার পর এই অবস্থান ব্যক্ত করেন শশী থারুর।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, কংগ্রেসের এমপি শশী থারুর সম্প্রতি ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক সংঘাত বন্ধের চুক্তির পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রতিক্রিয়ার সঙ্গে ১৯৭১ সালের যুদ্ধে ইন্দিরা গান্ধীর ভূমিকার তুলনা করার বিষয়ে সতর্ক করেছেন। দুই দেশের ডিরেক্টর জেনারেল অব মিলিটারি অপারেশনস (ডিজিএমও) পর্যায়ের আলোচনার পর সীমান্তসংঘাত বন্ধে ঐকমত্য হয়।
ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআইয়ের পোস্ট করা একটি ভিডিওতে থারুর বলেন, ‘১৯৭১ সাল ছিল এক বিশাল অর্জন। ইন্দিরা গান্ধী উপমহাদেশের মানচিত্রই পাল্টে দিয়েছিলেন। কিন্তু তখনকার পরিস্থিতি ভিন্ন ছিল। বাংলাদেশ একটি নৈতিক কারণে লড়াই করছিল এবং বাংলাদেশকে মুক্ত করা একটি স্পষ্ট উদ্দেশ্য ছিল।’ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে নরেন্দ্র মোদির তুলনা প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘শুধু পাকিস্তানের দিকে গোলাবর্ষণ করতে থাকা কোনো স্পষ্ট উদ্দেশ্য হতে পারে না।’
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালে পাকিস্তান বাংলাদেশে (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে) আক্রমণ চালালে যুদ্ধ শুরু হয়। এই যুদ্ধই বাংলাদেশের জন্ম দেয়। সে সময় বাংলাদেশের স্বাধীনতার সংগ্রামে ভারতের পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ ভূমিকা ছিল। মুক্তিযুদ্ধের শেষ দিকে এসে ভারত সরাসরি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামে। এটি ছিল প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ইন্দিরা গান্ধীর কার্যকালের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বছরে পাকিস্তান ভারতীয় বিমান ঘাঁটিগুলোতে হামলা চালানোর পরপরই সংঘাত তীব্র আকার ধারণ করে। ভারতের সামরিক সাফল্যে ও পরে সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পেছনে ইন্দিরা গান্ধীর সিদ্ধান্তমূলক নেতৃত্ব বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।