ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলোর নিরপেক্ষতা নিয়ে শুক্রবার ও শনিবার পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে আন্দোলনে নামছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস। এর আগে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী ও সোনিয়া গান্ধীকে এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেট (ইডি) ডেকে পাঠালে কংগ্রেসও তদন্তকারী সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখিয়েছে।
ভারতের বিরোধী দলগুলোর অভিযোগ, ক্ষমতাসীন দল বিজেপি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলোকে দিয়ে বিরোধীদের শায়েস্তা করছে। তবে, বিজেপির পাল্টা দাবি, অপরাধীদের নিস্তার নেই। এরই মধ্যে সিবিআই বীরভূম থেকে গ্রেপ্তার করে কলকাতায় নিয়ে এসেছে তৃণমূলের ডাকসাইটে নেতা অনুব্রত মণ্ডলকে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ গরু পাচারের। আদালত তাঁকে ১০ দিনের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। অর্থের বিনিময়ে চাকরি দেওয়ার অভিযোগে জেলে বন্দী রাজ্যের সাবেক শিল্পমন্ত্রী ও তৃণমূলের সাবেক মহাসচিব পার্থ চ্যাটার্জি। সব মিলিয়ে জ্যেষ্ঠ দুই নেতার এমন বেকায়দা অবস্থান তৃণমূলকেও বেকায়দায় ফেলে দিয়েছে।
ভারতের বৃহৎ রাজনৈতিক দল কংগ্রেস স্বশাসিত তদন্ত সংস্থাগুলোকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহারের অভিযোগ তুলে দেশজুড়ে আন্দোলন করলেও তৃণমূল নেতাদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে নীরব। তৃণমূলও অবশ্য আটক নেতাদের বিষয়ে বেশ সতর্ক।
এই বিষয়ে তৃণমূলের নেত্রী ও মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, ‘কোনো অনৈতিকতা ও দুর্নীতিকে দলে প্রশ্রয় দেওয়া হয় না।’ তৃণমূলের এমপি ও দলটির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই বলেছেন, ‘দুর্নীতিকে কোনোভাবেই মেনে নেবে না দল।’
একই কথা বলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তবে একই সঙ্গে মমতা বলেছেন, সিবিআই ও ইডি নিরপেক্ষ চেহারা না দেখানোয় শুক্র ও শনিবার দলের ছাত্র ও যুব সংগঠন জেলায় জেলায় বিক্ষোভ প্রদর্শন করবে। তবে বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি দিলীপ ঘোষের পাল্টা দাবি, ‘কেবল তো দুই উইকেট পড়েছে। আরও পড়বে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’
তৃণমূলের বিক্ষোভ কর্মসূচির বিপরীতে বিজেপি রাজ্য জুড়ে পাল্টা প্রচারে নেমেছে। তৃণমূলের বিরুদ্ধে আলাদা করে দুর্নীতির অভিযোগে সোচ্চার বামেরাও। ফলে বেশ কোণঠাসা অবস্থা পশ্চিমবঙ্গের শাসক দলের।