হোম > বিশ্ব > ইউরোপ

ট্রাম্পের শাসনে উল্টোরথে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপজুড়ে উদ্বেগ

ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক। ছবি: ইপিএ

সম্প্রতি ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানে রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনা করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। এরপর ইউরোপের নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার না দেওয়ার ঘোষণা দেন ট্রাম্প প্রশাসনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। এতে হতবাক হয়েছেন ইউরোপীয় নেতারা। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, আজ সোমবার ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ বৈঠকে ইউরোপের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের চোখে-মুখে ছিল গভীর উদ্বেগ।

ট্রাম্পের শাসনে যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক নীতিতে এই হঠাৎ পরিবর্তন ইউরোপের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে। তবে ইউরোপ আশা প্রকাশ করছে, ওয়াশিংটনের সঙ্গে ইউরোপের দীর্ঘদিনের সম্পর্ক বজায় থাকবে।

অনুষ্ঠানে ইইউর পররাষ্ট্রনীতি প্রধান কাইয়া কালাস বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা বার্তাগুলো আমাদের সবাইকে উদ্বিগ্ন করছে।’ তবে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, অতীতেও ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্র মতপার্থক্য কাটিয়ে উঠেছে এবং এবারও সেটাই হবে।’

কাইয়া কালাস আরও বলেন, অবশ্যই, ট্রান্স-আটলান্টিক সম্পর্ক পরিবর্তিত হতে চলেছে। তবে এত দিন যা কার্যকর ছিল, সেটিকে একেবারে বাতিল করে দেওয়া উচিত নয়।

এর আগে, জার্মানির সাধারণ নির্বাচনে জয়ী ফ্রিডরিশ মের্জ প্রশ্ন তুলেছিলেন, আগামী জুনের মধ্যে ন্যাটো তার বর্তমান কাঠামো ধরে রাখতে পারবে কি না। তিনি বলেন, ‘ইউরোপকে দ্রুত নিজেদের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা গড়ে তুলতে হবে।’

ডাচ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যাসপার ফেল্ডক্যাম্প বলেন, ‘বার্লিন প্রাচীর পতনের পর যে যুগ শুরু হয়েছিল, সেটি এখন শেষ।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের শুধু ইইউর মধ্যেই নয়, ব্রিটেন, নরওয়ে এবং অন্য আগ্রহী দেশগুলোর সঙ্গে একত্র হয়ে নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে, যার মধ্যে ট্রাম্পও অন্তর্ভুক্ত।’

ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের তিন বছর পূর্তিতে ইইউ পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ব্রাসেলসে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ১৬তম নিষেধাজ্ঞা প্যাকেজ অনুমোদন করেন। এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় অ্যালুমিনিয়াম আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা, গেমিং কনসোল বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা এবং নিষেধাজ্ঞা এড়াতে রাশিয়ার ব্যবহৃত ৭৪টি তথাকথিত ‘শ্যাডো ফ্লিট’ জাহাজের মালিককেও কালোতালিকাভুক্ত করা হয়েছে।

আগামী ৬ মার্চ ইউরোপীয় নেতারা আবারও এক জরুরি সম্মেলনে বসবেন, এই বৈঠকে তা-ও জানানো হয়। যেখানে ইউক্রেনকে অতিরিক্ত সহায়তা, ইউরোপের নিরাপত্তা এবং প্রতিরক্ষা খাতে অর্থায়ন নিয়ে আলোচনা হবে।

জার্মানির সম্ভাব্য চ্যান্সেলর মের্জ বলেন, ‘আমি কখনো ভাবিনি যে আমাকে টেলিভিশনে এমন কথা বলতে হবে। কিন্তু ট্রাম্পের সাম্প্রতিক বক্তব্যের পর এটি স্পষ্ট যে এই প্রশাসন ইউরোপের ভবিষ্যৎ নিয়ে খুব বেশি চিন্তিত নয়।’

চেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী জান লিপাভস্কি বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বক্তব্যে পরিবর্তন স্পষ্ট, বিশেষ করে গত দু-তিন সপ্তাহে আমরা তা-ই দেখেছি। তবে এর মানে এই নয়, আমাদের সম্পর্ক ছিন্ন হবে; বরং এর ঠিক বিপরীতটাই হওয়া উচিত।’

ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভনডার লিয়েন কিয়েভে বলেন, ‘আমাদের দ্রুত অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহ বাড়াতে হবে। এটি আমাদের কাজের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে।’

এদিকে আজ সোমবার ইউক্রেনে সফর করেছেন ইউরোপীয় নেতারা। কিন্তু এই সফরে শীর্ষ মার্কিন কর্মকর্তারা ছিলেন অনুপস্থিত। বিষয়টিকে ট্রাম্পের মস্কোঘেঁষা নীতির স্পষ্ট ইঙ্গিত বলে মনে করা হচ্ছে।

ট্রাম্প সম্প্রতি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে ‘নির্বাচনবিহীন একনায়ক’ বলে তিরস্কার করেছেন। এটিও কিয়েভে হতাশা সৃষ্টি করেছে। তবে ইউক্রেন জানিয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি চুক্তির চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। যার মাধ্যমে দেশটি ওয়াশিংটনের কাছে তাদের মূল্যবান খনিজ সম্পদের প্রবেশাধিকার দেবে।

ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের নেতারা এ সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে জানা গেছে।

বিশ্লেষকদের মতে, ইউরোপ এখন নতুন বাস্তবতার সামনে দাঁড়িয়ে, যেখানে আগামী মাসগুলোতে তাদের প্রতিক্রিয়াই আগামী কয়েক দশকের জন্য বৈশ্বিক শৃঙ্খলা নির্ধারণ করতে পারে।

১২৩ বন্দী মুক্তির বিনিময়ে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার পেল বেলারুশ

রাশিয়ার হামলায় বিদ্যুৎবিহীন ইউক্রেনের ১০ লাখ পরিবার

৫ ফুট উচ্চতার সুড়ঙ্গ খুঁড়ে বেলারুশ থেকে পোল্যান্ডে ১৮০ অভিবাসী, চাঞ্চল্যকর ভিডিও প্রকাশ

ব্রিটেনে নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকিতে কোটি মুসলিম, বেশির ভাগই বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানের

ইউক্রেনের ২ বন্দরে রুশ হামলায় ৩ তুর্কি জাহাজ ক্ষতিগ্রস্ত

দনবাসে ‘মুক্ত অর্থনৈতিক অঞ্চল’ গড়তে চায় যুক্তরাষ্ট্র, ব্যবসা করবে সবাই

স্কুলে কিশোরীদের হেডস্কার্ফ পরা নিষিদ্ধ করল অস্ট্রিয়া

যুক্তরাজ্যে ভারতীয়সহ ৬০০ ঔপনিবেশিক প্রত্নবস্তু চুরি, দুই মাস পর জানাল পুলিশ

ভারতীয় কারিগরদের তৈরি চপ্পল লাখ টাকায় বিক্রি করবে প্রাডা

আমরাই রাশিয়ার পরবর্তী লক্ষ্য—বার্লিনে ন্যাটো মহাসচিবের সতর্কবার্তা