ইউক্রেনের পক্ষে যুদ্ধ জেতা সম্ভব নয়, বরং তাদের এখন শান্তিচুক্তির পথে এগোনো উচিত বলে মন্তব্য করেছেন ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তা ফিল্ড মার্শাল লর্ড রিচার্ডস। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ইনডিপেনডেন্টের পডকাস্ট ‘ওয়ার্ল্ড অব ট্রাবল’-এ দেওয়া সাক্ষাৎকারে রিচার্ডস বলেছেন, ইউক্রেনকে লড়াই করতে উৎসাহিত করা হলেও তাদের জয়ী হওয়ার মতো সামর্থ্য বা সহায়তা দেওয়া হয়নি।
লর্ড রিচার্ডস ন্যাটোর আফগানিস্তান অভিযানে সেনা কমান্ডার ছিলেন এবং চলতি বছর তিনি ব্রিটেনের সর্বোচ্চ ‘পাঁচ তারকার’ জেনারেলে উন্নীত হন। পডকাস্টে তিনি বলেন, ‘আমরা ইউক্রেনকে যুদ্ধ করতে বলেছি, কিন্তু জেতার মতো রসদ দিইনি। আমার মনে করি, তারা জিততে পারবে না।’
এমনকি যথাযথ রসদ দিলেও এখন ইউক্রেন আর জিততে পারবে না বলে উল্লেখ করেছেন রিচার্ডস। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেছেন, রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে জেতার মতো পর্যাপ্ত জনবল ইউক্রেনের নেই।
ব্রিটিশ ফিল্ড মার্শালের এই মন্তব্যটি এমন এক সময়ে এসেছে, যখন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র চেয়ে ব্যর্থ হয়েছেন। জেলেনস্কিকে যথাযথ আপ্যায়ন করলেও ট্রাম্প তাঁকে জানিয়ে দেন, নিজস্ব অস্ত্রের মজুত রক্ষা করাই এখন যুক্তরাষ্ট্রের অগ্রাধিকার।
ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাতের পর জেলেনস্কি জানান, ট্রাম্প তাঁকে সরাসরি ‘না’ বলেননি, আবার ‘হ্যাঁ’ও বলেননি। ইউক্রেনের যুদ্ধ এখন চতুর্থ বছরে প্রবেশ করেছে। এই যুদ্ধে এখন অস্ত্র হিসেবে বড় ভূমিকা রাখছে ড্রোন।
রিচার্ডস বলেন, ‘ন্যাটো সেনারা সরাসরি যুদ্ধে নামবে না। কারণ ইউক্রেন আমাদের জন্য অস্তিত্বের প্রশ্ন নয়—অথচ রাশিয়ার জন্য এটি তাই।’
তিনি মনে করেন, ইউক্রেনের পক্ষে ‘একটি ড্র’ বা সমঝোতামূলক শান্তিচুক্তিই এখন বাস্তবসম্মত ফলাফল।
লর্ড রিচার্ডস সাক্ষাৎকারে আরও জানান, ২০০৩ সালে ইরাক যুদ্ধের সময় তিনি টনি ব্লেয়ার সরকারের ‘ভিত্তিহীন গোয়েন্দা রিপোর্ট’ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন। তাঁর মতে, ইরাক আক্রমণের বৈধতা নিয়েই তখন প্রশ্ন তোলা উচিত ছিল। রিচার্ডস বলেন, ‘আমরা সবাই তখন বুঝেছিলাম, এই সিদ্ধান্তের পেছনে কিছু গোপন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে। আমি তখনো বলেছিলাম, এই বিষয়টি দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।’