হোম > বিশ্ব > ইউরোপ

যুদ্ধ শুরুর পর সবচেয়ে বড় বন্দী বিনিময় করল ইউক্রেন ও রাশিয়া

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­

মুক্তির পর সহকর্মীর আলিঙ্গনে আবদ্ধ হলেন ইউক্রেনের এক সেনা। ছবি: বিবিসি

ইউক্রেন ও রাশিয়া একে অপরকে ৩৯০ জন করে সেনা ও বেসামরিক নাগরিক হস্তান্তর করেছে। ২০২২ সালে ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার রুশ আগ্রাসন শুরুর পর দুই দেশের মধ্যে এটাই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় বন্দী বিনিময়।

আজ শুক্রবার বিবিসি জানিয়েছে, এক সপ্তাহ আগে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সরাসরি আলোচনার মাধ্যমে হওয়া চুক্তির আওতায় রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয় দেশ ২৭০ জন সেনা ও ১২০ জন করে বেসামরিক নাগরিক ফেরত পেয়েছে। ইউক্রেন-বেলারুশ সীমান্তে এই বন্দী বিনিময়ের ঘটনা ঘটে।

তুরস্কের আলোচনায় উভয় পক্ষই ১ হাজার করে বন্দী বিনিময়ের ব্যাপারে সম্মত হয়েছিল। আজ শুক্রবার ওই বিনিময় চুক্তির প্রথম ধাপ সম্পন্ন হয়েছে। শিগগিরই আরও বন্দী বিনিময় হবে বলেও নিশ্চিত করেছে সংশ্লিষ্ট দুই পক্ষ।

এর আগে সম্প্রতি ছোট পরিসরে কিছু সংখ্যক বন্দী বিনিময় হয়েছে। তবে এত বিপুলসংখ্যক বেসামরিক বন্দীর হস্তান্তর এবারই প্রথম ঘটল।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইউক্রেনের হাতে বন্দী হওয়া রুশ সেনা ও বেসামরিক নাগরিকদের মধ্যে কিছু মানুষ রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চল থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তারা বর্তমানে বেলারুশের ভূখণ্ডে রয়েছে এবং চিকিৎসার জন্য রাশিয়ায় নিয়ে যাওয়া হবে।

সদ্য মুক্তি পাওয়া রুশ সেনাদের একাংশ। ছবি: বিবিসি

সামাজিক মাধ্যমে এক বার্তায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ‘আমরা আমাদের মানুষদের ঘরে ফিরিয়ে আনছি। প্রত্যেক বন্দীর নাম, পরিচয় ও বিবরণ আমরা যাচাই করছি।’

ইউক্রেনের যুদ্ধবন্দী বিষয়ক সমন্বয় দপ্তর জানিয়েছে, সদ্য মুক্তি পাওয়া তাদের ২৭০ জন সেনা পূর্ব ও উত্তর ইউক্রেনের বিভিন্ন অঞ্চলে যুদ্ধ করেছেন। বিশেষ করে—কিয়েভ, চেরনিহিভ, সুমি, দোনেৎস্ক, খারকিভ ও খেরসনে যুদ্ধরত ছিলেন তারা।

ছেলে ভ্যালেরির ছবি হাতে অপেক্ষারত ইউক্রেনীয় মা ওলহা। ছবি: বিবিসি

আরও জানানো হয়, শুক্রবার মুক্তি পাওয়া ৩৯০ জনের মধ্যে তিনজন নারী রয়েছেন এবং কিছু সেনা ২০২২ সাল থেকেই বন্দী ছিলেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে বন্দী বিনিময় সম্পন্ন হওয়ায় অভিনন্দন জানান এবং লিখেছেন, ‘এটি কি বড় কিছুর সূচনা হতে পারে???’

রাশিয়ার হাতে বন্দী ইউক্রেনীয় সেনাদের স্বজনেরা শুক্রবার উত্তর ইউক্রেনে জড়ো হন এই আশায় যে, তাঁদের প্রিয়জনদের কেউ হয়তো মুক্তি পাবেন। এদের মধ্যে ছিলেন নাতালিয়া নামে এক নারী। তাঁর ছেলে ইয়েলিজার তিন বছর আগে সেভেরোডোনেৎস্কের যুদ্ধে বন্দী হন। নাতালিয়া বিবিসিকে জানান, তিনি বিশ্বাস করেন ছেলে একদিন ফিরে আসবে। তবে কবে আসবে, তা তিনি জানেন না।

সদ্য মুক্তি পাওয়া ইউক্রেনের সেনাদের একাংশ। ছবি: বিবিসি

ওলহা নামে অন্য এক মা জানিয়েছেন, তাঁর ছেলে ভ্যালেরি পূর্ব ইউক্রেনে আরও পাঁচজন সৈন্যের সঙ্গে বন্দী হওয়ার পর থেকেই তাঁর জীবন থেমে গেছে। তিনি জানেন না তাঁর ছেলে বেঁচে আছে, নাকি মরে গেছে। দুই মাস আগে লুহানস্কের এক গ্রাম থেকে নিখোঁজ হন তাঁর ছেলে।

এদিকে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ শুক্রবার জানান, দ্বিতীয় দফা বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে এবং সেখানে মস্কো ইউক্রেনের কাছে একটি স্মারকলিপি তুলে দেবে।

রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেলেনস্কিকে বৈধ নেতা হিসেবে মানতে অস্বীকৃতি জানিয়ে নতুন নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তাব দিয়েছেন। এটি ভবিষ্যৎ শান্তিচুক্তির পূর্বশর্ত হতে পারে বলে ইঙ্গিত দেন তিনি।

চুক্তি স্বাক্ষরের প্রস্তুতি প্রসঙ্গে ল্যাভরভ বলেন, ‘প্রথমে আমাদের একটি চুক্তি দরকার। চুক্তি হলে পরে আমরা ঠিক করব। তবে প্রেসিডেন্ট পুতিন বহুবার বলেছেন—জেলেনস্কির কোনো বৈধতা নেই।’

এক বছরে ইউক্রেনের ৫ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা দখলের দাবি রাশিয়ার

রাশিয়ার দখলে থাকা ইউক্রেনের জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ক্রিপ্টোমাইনিংয়ে কাজে লাগাতে চান ট্রাম্প: পুতিন

ক্রিসমাসের প্রার্থনায় পুতিনের মৃত্যু চাইলেন জেলেনস্কি

মস্কোতে বিস্ফোরণ, দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ নিহত তিন

ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চল থেকে সেনা প্রত্যাহারের ইঙ্গিত জেলেনস্কির

পুতিনের সঙ্গে সিরিয়ার মন্ত্রীদের বৈঠক, আলোচনায় প্রতিরক্ষা সহযোগিতা

ইউক্রেনের আরও এক শহর রাশিয়ার দখলে, মস্কোয় ড্রোন হামলা

ফিলিস্তিনপন্থী প্ল্যাকার্ড হাতে এবার লন্ডনে গ্রেপ্তার গ্রেটা থুনবার্গ

রেড স্কয়ারে কেন গায়ে আগুন দিলেন রুশ প্রতিরক্ষা কারখানার মালিক

ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানের আলোচনা প্রকৃত ফলাফলের খুব কাছাকাছি: জেলেনস্কি