যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বব্যবস্থা ধ্বংস করছে বলে মন্তব্য করেছেন ইউক্রেনের সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল ভ্যালেরি জালুঝনি। ইউক্রেনে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে বিপুল জনপ্রিয় জালুঝনি বর্তমানে যুক্তরাজ্যে রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। আজ বৃহস্পতিবার লন্ডনের চ্যাথাম হাউসে এক সম্মেলনে বক্তব্য রাখার সময় তিনি বলেন, নতুন ট্রাম্প প্রশাসনের পররাষ্ট্রনীতির ধরন পশ্চিমা বিশ্বের ঐক্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
জালুঝনি এমন এক সময় এই মন্তব্য করেছেন, যখন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কি ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
গত শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে এক বৈঠকে ট্রাম্প ও জেলেনস্কির মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের ঘটনা ঘটে। প্রকাশ্য এই বিরোধের পর গত কয়েক দিন ধরেই ওয়াশিংটনের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে কিয়েভ।
এদিকে গত এক সপ্তাহ ধরে চলমান উত্তেজনার মধ্যে বুধবার ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা ও গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে বিশ্লেষকেরা মনে করেন, ইউক্রেনকে শান্তি আলোচনার টেবিলে নিয়ে আসার জন্যই ট্রাম্প প্রশাসন এই কৌশল নিয়েছে।
এ অবস্থায় যুক্তরাজ্যে জালুঝনির বক্তব্য ইঙ্গিত দেয়, যুক্তরাষ্ট্রের নীতিতে তাঁর দেশের এখনো অসন্তোষ রয়ে গেছে।
তিনি বলেন, ‘বিশ্বব্যবস্থাকে শুধু অশুভ অক্ষ শক্তি (অ্যাক্সিস অব ইভিল) এবং রাশিয়াই বদলে দিতে চাইছে না, বরং যুক্তরাষ্ট্র এটিকে চূড়ান্তভাবে ধ্বংস করছে।’
জালুঝনি আরও বলেন, ‘মার্কিন প্রশাসন এমন এক রাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে, যার নেতৃত্বে একজন যুদ্ধাপরাধী (পুতিন) রয়েছেন। তারা ক্রেমলিনের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা করছে।’
তিনি সতর্ক করে বলেন—ওয়াশিংটনের নীতিগত পরিবর্তনের ফলে ন্যাটো বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে এবং ইউরোপ হতে পারে রাশিয়ার পরবর্তী লক্ষ্যবস্তু।
উল্লেখ্য, ট্রাম্প তাঁর নির্বাচনী প্রচারের সময় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি দ্রুত ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটাবেন। এ লক্ষ্যে গত মাসে সৌদি আরবে রাশিয়ার সঙ্গে একটি বৈঠক করে যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রতিনিধিদল। তবে সেখানে ইউরোপ বা ইউক্রেনের কোনো প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন না।
জালুঝনি মত দিয়েছেন, জাতিসংঘে রুশ আগ্রাসনবিরোধী প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধিতা এবং গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান স্থগিত রাখার মার্কিন সিদ্ধান্ত পুরো বিশ্বের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।