ক্রিমিয়ার কের্চ সেতুতে আবারও সাহসী হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। দেশটির নিরাপত্তা সংস্থা (এসবিইউ) জানিয়েছে, কয়েক মাসের গোপন পরিকল্পনার পর এই হামলা চালানো হয়। স্থানীয় সময় আজ মঙ্গলবার ভোর ৪টা ৪৪ মিনিটে পানির নিচে স্থাপন করা বিস্ফোরক দিয়ে সেতুটির কাঠামোগত স্তম্ভ ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে। প্রায় ১১ শ কেজি বিস্ফোরক দিয়ে এই বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। তবে এতে কোনো বেসামরিক মানুষের প্রাণহানি ঘটেনি।
যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমস জানিয়েছে, ২০১৮ সালে নির্মিত ১২-মাইল দীর্ঘ কের্চ সেতুটি রাশিয়া এবং রাশিয়া-অধিকৃত ক্রিমিয়ার মধ্যে সরবরাহ রুট হিসেবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইউক্রেন এটিকে বরাবরই অবৈধ দখলের প্রতীক হিসেবে দেখে আসছে। এর আগেও ২০২২ এবং ২০২৩ সালে সেতুটিতে হামলা চালিয়েছিল ইউক্রেনের বাহিনী। প্রথমবার হামলা চালানো হয়েছিল একটি ট্রাক বোমার মাধ্যমে।
এসবিইউ প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ভাসিল মালিউক জানিয়েছেন, তিনি নিজে এই অভিযান তদারকি করেছেন। ভাসিল বলেন, ‘ঈশ্বর ত্রিত্বে বিশ্বাসী, আর এসবিইউ যে পরিকল্পনা করে তা শেষ করেই ছাড়ে। আমরা আগেও দুবার সেতুটিতে হামলা চালিয়েছি, এবার পানির তলদেশ দিয়ে তা করলাম। আমাদের ভূখণ্ডে কোনো অবৈধ রুশ কাঠামোর স্থান নেই।’
হামলার পর এসবিইউ যে ভিডিও প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যায়—বিশাল বিস্ফোরণে পানির নিচ থেকে ধোঁয়া ও পানি আকাশে উঠছে। তবে মঙ্গলবার দুপুরে সেতুটিকে সচল দেখা গেছে। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, হামলার পর সেতুটি প্রায় চার ঘণ্টা বন্ধ ছিল।
কের্চ সেতুটি নির্মাণ ছিল ক্রিমিয়া দখলের প্রতীক হিসেবে রাশিয়ার এক বিশাল কৌশলগত পদক্ষেপ। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন একটি লরি চালিয়ে নিজে সেতুটির উদ্বোধন করেছিলেন। প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছে এই সেতু নির্মাণে।
এদিকে মাত্র দুই দিন আগেই ড্রোন ব্যবহার করে রাশিয়ার ভেতরে কয়েক হাজার মাইল দূরের বিমানঘাঁটিতে ৪০ টিরও বেশি যুদ্ধবিমানে হামলা চালিয়েছিল ইউক্রেন। এ ছাড়াও রুশ কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, পশ্চিম সীমান্ত অঞ্চলের একটি রেল সেতুতেও হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। এতে একটি যাত্রীবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে সাতজন নিহত এবং বহু মানুষ আহত হয়েছে। রাশিয়ার তদন্ত কমিটি এটিকে ‘কিয়েভ শাসিত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ বলে অভিহিত করেছে। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই আবারও হামলা চালাল কিয়েভ।