গাজায় চলমান সংঘাতে ইসরায়েলের পক্ষে অবস্থান নিয়ে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে নেদারল্যান্ডস সরকারে বিরুদ্ধে মামলা করতে যাচ্ছে চারটি মানবাধিকার সংগঠন। গতকাল মঙ্গলবার এক যৌথ বিবৃতিতে গাজায় সৃষ্ট পরিস্থিতির জন্য নেদারল্যান্ডসকে আংশিকভাবে দায়ী করে সংগঠনগুলো।
যৌথ বিবৃতিতে অক্সফাম নোভিব, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, প্যাক্স ও দ্য রাইটস ফোরাম বলে, গাজায় যুদ্ধ আইন লঙ্ঘন ও গাজার বেসামরিক নাগরিকদের সামষ্টিক শাস্তির জন্য নেদারল্যান্ডসও আংশিক দায়ী। বিশেষ করে, ইসরায়েলে অস্ত্র সরবরাহ চালিয়ে যাওয়ার জন্য তারা ইসরায়েলের নিন্দা করেন।
তারা নেদারল্যান্ডস সরকারকে দেশটির নীতি কাঠামো, সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা এবং আন্তর্জাতিক চুক্তি অনুযায়ী কাজ করার দাবি জানায়।
অক্সফাম নোভিবের পরিচালক মিচিয়েল সারভায়েস বলেন, ত্রাণ সংস্থাগুলো গাজার বেসামরিক জনগোষ্ঠীর জন্য ত্রাণ সরবরাহ করতে চায়। কিন্তু অনবরত গোলা বর্ষণের কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না। অবিশ্বাস্য হলেও এ বোমাবর্ষণের পেছনে রয়েছে নেদারল্যান্ডসের সামরিক সহযোগিতা।
তিনি আরও বলেন, ‘এটি থামাতে হবে। আমাদের জন্য আদালতে যাওয়া হবে একটি নজিরবিহীন পদক্ষেপ কিন্তু দুঃখজনকভাবে আর কোনো উপায় নেই।’
নেদারল্যান্ডসের বৃহত্তম শান্তি সংগঠন প্যাক্সের পরিচালক মার্টজে ভ্যান নেস বলেন, নেদারল্যান্ডসের অস্ত্র রপ্তানির জন্য কঠোর মূল্যায়ন কাঠামো রয়েছে। নেদারল্যান্ডসের সামরিক পণ্যগুলো মানবাধিকার বা আন্তর্জাতিক মানবিক আইন লঙ্ঘনে ব্যবহৃত হতে পারে এসব ক্ষেত্রে অস্ত্র রপ্তানি কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।
মার্টজে ভ্যান নেস বলেন, স্পষ্ট সতর্কতা দেওয়া সত্ত্বেও সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে আইনের বিরুদ্ধে গিয়েছে। এজন্য তারা এ অস্ত্রগুলোর ব্যবহারের জন্য আংশিক দায়ী।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের পরিচালক ডাগমার ওডশুর্ন বলেন, নেদারল্যান্ডস সরকার তাদের সব বিশ্বাসযোগ্যতা হারাচ্ছে এবং অস্ত্র সরঞ্জাম সরবরাহ করে এটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘনে জড়িত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।
গাজার ওপর ইসরায়েলের বর্বরোচিত হামলায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ১১ হাজার ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে বেশির ভাগই নারী ও শিশু। অনবরত বিমান ও স্থল হামলায় ধ্বংস হয়ে গেছে গাজার হাজারো বেসামরিক কাঠামো।