ইউক্রেনপন্থী স্লোগানকে নিজের ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্কের নাম হিসেবে ব্যবহার করায় রাশিয়ায় এক শিক্ষার্থীকে ১০ দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মস্কো স্টেট ইউনিভার্সিটির ওই শিক্ষার্থী ‘স্লাভা ইউক্রেনি’ অর্থাৎ ‘ইউক্রেনের জয় হোক!’ স্লোগানকে ওয়াই-ফাইয়ের নাম রাখেন।
গত বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) মস্কোর একটি আদালত ‘চরমপন্থী সংগঠনের প্রতীক’ প্রদর্শনের দায়ে তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে। এর আগে গত বুধবার (৬ মার্চ) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডর্মেটরি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই ইউক্রেনের সমর্থন বা যুদ্ধের সমালোচনা করায় হাজারো মানুষকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে বা জরিমানা করা হয়েছে।
আদালতের নথি অনুযায়ী, পুলিশ কর্মকর্তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবাসনের মধ্যে তার কক্ষ পরিদর্শন করেন এবং তার ব্যক্তিগত কম্পিউটার ও একটি ওয়াই-ফাই রাউটার জব্দ করেন।
আদালত বলছে, তিনি ‘ওয়াই-ফাই সীমার মধ্যে অসংখ্য ব্যবহারকারীর কাছে ‘স্লাভা ইউক্রেনি!’ স্লোগান প্রচার করতে নেটওয়ার্কটি ব্যবহার করেছিলেন। রাউটারটি এখন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
‘স্লাভা ইউক্রেনি’ ইউক্রেনের সমর্থকদের জন্য একটি মন্ত্রে পরিণত হয়েছে। ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই রাশিয়ার এই আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে স্লোগানটি শোনা যায়।
শিক্ষার্থীটিকে ‘নাৎসি প্রতীকবাদের অথবা চরমপন্থী সংগঠনের প্রতীক প্রকাশ্য প্রদর্শনের জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। ইউক্রেনে আগ্রাসনকে বৈধতা দিতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বারবারই ইউক্রেনে নব্য নাৎসি শাসন সম্পর্কে ভিত্তিহীন দাবি তুলে আসছেন।
যুদ্ধ সম্পর্কে মন্তব্যের জন্য শাস্তিপ্রাপ্ত সাধারণ রুশদের দীর্ঘ তালিকার মধ্যে এই শিক্ষার্থী সর্বশেষতম। গত মাসে পুতিন সমালোচক ও বিরোধীদলীয় নেতা অ্যালেক্সেই নাভালনির স্মরণে ফুল দেওয়ায় শত শত রুশ নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়।
এমনকি রাশিয়ায় এই সংঘর্ষকে যুদ্ধ বলে অভিহিত করাও নিষিদ্ধ। দেশটিতে এই সংঘর্ষকে বিশেষ সামরিক অভিযান বলে অভিহিত করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।