আটটি দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত ১৩ বছর বয়সী এক চীনা বালক। আইসিইউ শয্যা থেকে মাকে একটি আবেগঘন চিঠি লিখেছে সে। চিঠিতে সে মাকে তার জীবন রক্ষাকারী চিকিৎসা বন্ধ করে দিতে অনুরোধ করেছে। বলেছেন, মা যেন শুধু শুধু তার জন্য হয়রান না হয়, তিনি যেন হাল ছেড়ে দেন!
স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, লিউ ফুয়ু নামের ওই বালক মধ্য চীনের হেনান প্রদেশের বাসিন্দা। সম্প্রতি কিডনি ফেইলিওর-এর কারণে তাকে পঞ্চমবারের মতো ঝেংঝো ইউনিভার্সিটির ফার্স্ট অ্যাফিলিয়েটেড হসপিটালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়েছে। প্রতিবেদন অনুসারে, তার বর্তমান শারীরিক অবস্থা খুব সঙ্গীন, শরীর অত্যন্ত দুর্বল। ওজন কমে হয়েছে মাত্র ১৫ কেজি।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম হেনান টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তার চিকিৎসক হুও ইউফেং জানান, ছেলেটি বিভিন্ন ধরনের জটিল রোগে ভুগছে, যার মধ্যে অন্যতম কিডনি ফেইলিওর। তার মা লি জানিয়েছেন, আইসিইউতে সাক্ষাতের সময় অত্যন্ত সীমিত হওয়ায় মা ও ছেলে চিঠির মাধ্যমে কথা হয়। মা-ছেলে মনের কথা চিঠিতে জানায়। এক চিঠিতে ঝেংঝো লিখেছিল, সে মাকে খুব মিস করছে। এই চিঠি পেয়ে মা দ্রুত হাসপাতালে ছুটে যান। মায়ের মন বলছিল, ছেলে ভালো নেই।
আরেকটি মর্মস্পর্শী চিঠিতে ঝেংঝো মাকে অনুরোধ করে লেখে, ‘মা, চলো ওষুধগুলো ফিরিয়ে দিই। এগুলো কোনো কাজ করছে না। আমি যদি বাড়ি যাই তাহলে সুস্থ হয়ে যাব।’ এর উত্তরে একজন মা হিসেবে লি দৃঢ়ভাবে উত্তর দেন, ‘যাই হোক না কেন, আমি তোমাকে বাঁচাবই।’
চিকিৎসকদের মতে, এই মুহূর্তে ঝেংঝোর জীবন রক্ষাকারী চিকিৎসা বন্ধ করে দিলে ফলাফল মারাত্মক হতে পারে।
এই হৃদয়বিদারক ঘটনাটি সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক আবেগপূর্ণ সাড়া জাগিয়েছে। চীনা স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের কমেন্ট বক্সে পাঠকেরা ছেলেটির সাহস এবং মায়ের অদম্য ইচ্ছার প্রতি সহানুভূতি জানিয়েছে।
নেটিজেনদের মধ্যে একজন লিখেছেন, ‘বেচারা ছেলে! আশা করি সে দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে।’
আরেকজন মন্তব্য করেছেন, ‘যদিও আমি মনে করি, চিকিৎসা বন্ধ করলে সে কম কষ্ট পাবে, তবুও একজন মায়ের পক্ষে সন্তানের বাঁচার আশা ছেড়ে দেওয়া কতটা যন্ত্রণাদায়ক তা আমি বুঝতে পারি।’
তথ্যসূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট