Ajker Patrika

ভার্চুয়াল কাপলিং: তারহীন স্বয়ংক্রিয় ট্রেন-নিয়ন্ত্রণ সিস্টেমের সফল প্রয়োগ চীনের

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
চীন মালবাহী ট্রেন একযোগে একটি সমন্বিত তারহীন ব্যবস্থার মাধ্যমে পরিচালনার নতুন প্রযুক্তির সফল পরীক্ষা চালিয়েছে। ছবি: সংগৃহীত
চীন মালবাহী ট্রেন একযোগে একটি সমন্বিত তারহীন ব্যবস্থার মাধ্যমে পরিচালনার নতুন প্রযুক্তির সফল পরীক্ষা চালিয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

আরও একটি প্রযুক্তিগত সাফল্য পেল চীন। দেশটি তারহীন এক স্বয়ংক্রিয় যোগাযোগ ব্যবস্থার মাধ্যমে একাধিক মালবাহী ট্রেনকে একই লাইনে ভিন্ন ভিন্ন অবস্থান থেকে একযোগে চালিয়েছে। গত সোমবার চীনের ইনার মঙ্গোলিয়ার বাওশেন রেলপথে এই পরীক্ষামূলক কাজ সম্পন্ন হয়।

হংকং থেকে প্রকাশিত ইংরেজি দৈনিক সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের খবরে বলা হয়েছে, পাঁচ হাজার টন ওজনের সাতটি ট্রেন একই সঙ্গে একটি রেলপথে চলেছিল এবং তারা গতিশীলভাবে নিজেদের মধ্যেকার দূরত্ব নিয়ন্ত্রণ করছিল। এর ফলে নতুন করে রেলপথ পাতার প্রয়োজন কমবে এবং অর্থও সাশ্রয় হবে।

এই ট্রেন বহর নিয়ন্ত্রণ করতে যে তারহীন ব্যবস্থাটি ব্যবহার করা হয়েছে, তা তৈরি করেছে চায়না শেনহুয়া এনার্জি। এটি রাষ্ট্রায়ত্ত খনি ও জ্বালানি সংস্থা সিএইচএন এনার্জির একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান। চিনা সংস্থাটি যে প্রযুক্তি ব্যবহার করছে, তা গাড়িতে ব্যবহৃত জনপ্রিয় ‘অ্যাডভান্সড ড্রাইভার-অ্যাসিস্ট্যান্স সিস্টেম বা এডিএএস’—এর মতোই। এই প্রযুক্তিটি ‘অ্যাডাপ্টিভ ক্রুজ কন্ট্রোল’-এর সঙ্গে ব্যবহার করা হয়, যা গাড়িকে গতিশীলভাবে গতি সামঞ্জস্য করতে সাহায্য করে।

সাধারণ রেল পরিচালন ব্যবস্থায়, নিরাপত্তার খাতিরে ট্রেনগুলোকে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে চলতে হয়। দ্রুতগামী (বা এক্সপ্রেস) এবং ভারী ট্রেনের ক্ষেত্রে, ঠিকমতো ব্রেক করার জন্য এই দূরত্ব আরও বেশি রাখতে হয়। কিন্তু চিনের এই ‘ভার্চুয়াল কাপলিং’ ব্যবস্থাটি হয়তো সেই দূরত্ব কমাতে সাহায্য করবে। কারণ, এই ব্যবস্থায় ট্রেনগুলো গতি পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের ব্রেকিং ক্ষমতাকে মেপে নিতে পারে।

এক বিবৃতিতে সিএইচএন এনার্জি বলেছে, ‘ট্রেন-থেকে-ভূমি এবং ট্রেন-থেকে-ট্রেন যোগাযোগকে কাজে লাগিয়ে এই প্রযুক্তি আপেক্ষিক গতি এবং চরম দূরত্বকে একত্রিত করে একটি দ্বি-মাত্রিক নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করে। এর ফলে কাছাকাছি থাকা ট্রেনগুলো গতিশীলভাবে কাজ করতে পারে।’

এই নতুন ব্যবস্থাটির দৌলতে নতুন লাইন না বাড়িয়েও আরও বেশি মালগাড়ি চালানো সম্ভব হবে। পরীক্ষামূলক দৌড়ে, মালগাড়িগুলোর সম্মিলিত পণ্য বহন ক্ষমতা ছিল ৩৫ হাজার টন এবং এগুলো পৃথকভাবে চলা ট্রেনের চেয়ে অনেক কাছে থেকে চলেছে।

নিরাপদ, সুলভ এবং পরিবেশবান্ধব সুবিধার জন্য চীন মালগাড়ির নেটওয়ার্ক বাড়াতে বিস্তর বিনিয়োগ করেছে। রাষ্ট্রায়ত্ত পত্রিকা চায়না ডেইলির মতে, এই বছরের প্রথম তিন ত্রৈমাসিকে চীন তিন বিলিয়ন টনের বেশি পণ্য পরিবহন করেছে মালগাড়ি দিয়ে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...