দেশজুড়ে সপ্তাহব্যাপী চলমান বিক্ষোভ ও রাজনৈতিক অস্থিরতার পর নেপালে জারি করা কারফিউ ও অন্যান্য বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করে নিয়েছে সরকার। সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কি দেশের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার একদিন পরই এই পদক্ষেপ নেওয়া হলো। এই সিদ্ধান্ত জনজীবনে স্বস্তি ফিরিয়ে এনেছে।
এর আগে নেপালি সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে দেশব্যাপী কঠোর কারফিউ জারি করেছিল, আজ শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত বলবৎ থাকার কথা ছিল। তবে বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ায় ভোর থেকেই কাঠমান্ডুসহ সারা দেশে গণপরিবহন পুনরায় চালু হয়েছে। দীর্ঘ সময় পর দূরপাল্লার বাসগুলো কাঠমান্ডু থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়ে গেছে। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা থেকেই গোঙ্গাবু বাস টার্মিনাল থেকে কিছু বাস চলাচল শুরু করেছিল। বর্তমানে কাঠমান্ডু উপত্যকায় যানবাহনের চলাচল এবং সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
নেপালের ইতিহাসে প্রথম নারী হিসেবে প্রধানমন্ত্রী পদে অধিষ্ঠিত হয়েছেন সুশীলা কার্কি। শুক্রবার রাতে রাষ্ট্রপতি রাম চন্দ্র পাউডেলের উপস্থিতিতে শীতল নিবাসে এক বিশেষ অনুষ্ঠানে তাকে অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ পড়ানো হয়। তরুণ প্রজন্ম বা ‘জেন-জি’-এর নেতৃত্বে কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা তীব্র বিক্ষোভের মুখে এই সরকার গঠিত হলো। বিক্ষোভে মূল দাবি ছিল পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে একটি নির্দলীয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠা করা।
কার্কির শপথের পর রাষ্ট্রপতি রাম চন্দ্র পাউডেলের কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কার্কির সুপারিশে তিনি সংসদ ভেঙে দিয়েছেন এবং আগামী বছরের ৫ মার্চ নতুন নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।
নতুন সরকার গঠনের পর সুশীলা কার্কির প্রধান দায়িত্ব হলো আগামী ছয় মাসের মধ্যে নতুন সংসদীয় নির্বাচন পরিচালনা করা এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ক্ষমতা হস্তান্তর নিশ্চিত করা। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নিরাপত্তা বাহিনী এখন দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে কাজ করছে এবং দেশজুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসছে। এই পদক্ষেপের ফলে নেপালের রাজনৈতিক সংকট সমাধানের পথে এক গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।